জাফরান বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মশলা। আর আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসা ব্যবস্থায় এটি অমূল্য। অসাধারণ গুণের জন্য উপাদানটি মানুষের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই, কেজার নামেও পরিচিত এই মসলা নারীদের মাসিকের বাধা ও অন্যান্য সমস্যা দূর করে।
জাফরান কীভাবে নারীদের ঋতুকালীন প্রদাহ দূর করা ও মাসিকে বাধার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে তা দেওয়া হলো:
ডা. ভারত আগরওয়ালের ‘হিলিং স্পাইসিস’ গ্রন্থ অনুসারে ‘জার্নাল অব মিডওয়াইফেই অ্যান্ড উইমেন্স হেলথ’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসিকজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন এমন ১৮০ জন নারীর ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। তাদেরকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগের নারীদের তিনবারের মাসিকে প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম জাফরান দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ভাগের নারীদের দেওয়া হয় স্টেরয়েডাল মেডিসিন বা প্রাণিদেহে স্বাভাবিকভাবে উৎপন্ন জৈবযৌগের ওষুধ এবং তৃতীয় ভাগের নারীদের দেওয়া হয় প্লেসবো।
দেখা গেছে তৃতীয় ভাগের নারীদের তুলনায় প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগের নারীদের মাসিক চলাকালীন ব্যথার তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। অন্য এক গবেষণায় দেখা যায় জাফরান নারীদের পিএমএস উপসর্গ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে।
জাফরানের অ্যান্যালজেসিক ও অ্যান্টিস্পাসমোডিক উপাদান মাসিক প্রক্রিয়াকে সহজ ও রক্ত প্রবাহকে স্বাভাবিক করে, খিঁচুনির বিরুদ্ধে কাজ করে এবং ব্যথা ও বিরক্তিভাব উপশম করে।
মাসিকে জাফরান কীভাবে ব্যবহার করবেন?
এক কাপ দুধ ফুটিয়ে নিন। এর সঙ্গে এক চা-চামচ জাফরান মেশান। এবার অল্প তাপে দুই মিনিট রেখে দিন। এটিকে সুস্বাদু করতে একটু মধু ও ঠাণ্ডা চা মেশাতে পারেন। ঘুমানোর আগে সকালে বা রাতে এটি পান করুন।
অন্য উপায়টি হলো জাফরানের একটি আঁশ নিন। এটি কুচি কুচি করে কাটুন। এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে হালকা গরম পানিতে সেবন করুন। মাসিক শুরু হওয়ার তিন দিন আগে আপনি এগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
সতর্কতা :
লক্ষ্য রাখতে হবে যেন জাফরানের পরিমাণ বেশি না হয়। প্রতিদিন কেবল একটি আঁশই যথেষ্ট। যদি আপনি স্তন্যদায়ী মা হন তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। এ ব্যবস্থা শীতকালে গ্রহণ করুন। কেননা, জাফরান শরীরে তাপ উৎপন্ন করে। ফলে গ্রীষ্মকালে এটি আপনার শরীরের জন্য উপযুক্ত নয়।