প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা বাতিলের পর পুনরায় যে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে- এর ফল প্রকাশ নিয়ে নানা নাটকীয়তার সৃষ্টি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সাধারণত পরীক্ষার ফল প্রকাশের একদিন আগে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা জানানো হয়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষার ফল ঘোষণা করে।
যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সংশ্লিষ্ট ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা উপস্থিত থাকেন। কিন্তু এবার সেটি করা হয়নি।
এদিকে পুনঃপরীক্ষার ঘোষিত ফলাফলে দেয়া যায়, প্রথমবারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৮ হাজার ৪৬৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পুনঃপরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৬ হাজার ১৮১ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯ হাজার ৮৮৬ জন। সেই হিসেবে পাসের হার ৬১ দশমিক ১ শতাংশ।
সোমবার বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এই ফল প্রকাশ করা হয়। গেল শুক্রবার বিকাল ৩টায় এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
অন্যদিকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ৬ হাজার ২৯৫ জন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় ফেল করেছে। সেই হিসেবে ফেলের হার ৩৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
অথচ এই শিক্ষার্থীরা সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত সমন্বিত ‘ঘ’ ইউনিটের প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। কিন্তু পুনঃপরীক্ষায় তাদের ১২০ এর মধ্যে ন্যূনতম পাস নম্বর ৪৮ পায়নি। অথবা বিষয়ভিত্তিক হিসেবে ৩০ এর মধ্যে ন্যূনতম ৮ পায়নি।
এদিকে ‘ঘ’ ইউনিটের সোমবার দুপুর ১১টা ১৯ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে একটি মেইল পাঠানো হয়। যেখানে বিকাল ৫টায় ফলাফল প্রকাশের কথা বলা হয়। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে সেখানে কিছুই উল্লেখ ছিল না।
ফলে অতীতের মতো বিকাল ৫টায় গণমাধ্যমকর্মীরা ফলাফলের জন্য কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে গেলে দেখা যায়, সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশের কোনো আয়োজন নেই।
এছাড়া জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো ফলাফল প্রকাশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এ ছাড়াও এবারের ভর্তি পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের থেকে প্রশ্নপত্রের কপি রেখে দেয়া হয়েছে।
এর আগে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেয়া হতো। ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
এখন থেকে ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষার প্রশ্ন রেখে দেয়া হবে। তবে প্রশ্নপত্র রেখে দেয়ার বিস্তারিত কারণ জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের পুনঃপরীক্ষার সর্বমোট ৯ হাজার ৮৮৬ জন উত্তীর্ণ হয়। পাশের হার ৬১ দশমিক ১ শতাংশ।
পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৮১৪, ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ১ হাজার ১৭২ এবং মানবিক শাখায় ১ হাজার ৯০০ জন উত্তীর্ণ হয়।
পুনঃপরীক্ষার বিস্তারিত ফলাফল ও ভর্তিসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের (admission.eis.du.ac.bd) ওয়েবসাইট থেকে জানা যাবে। তাছাড়া যে কোনো অপারেটরের মোবাইল ফোন থেকে DU GHA ˂roll no˃ টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে পাঠিয়ে ফিরতি এসএমএস’র মাধ্যমে ফলাফল পাওয়া যাবে।