জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রযুক্তি ব্যবহার করে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
একজন দণ্ডিত আসামির নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণের বৈধতা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
এ বিষয় নিয়ে রোববার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ইসিতে গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ নিয়ে বিএনপি বলেছে, তাদের মনোনয়ন বোর্ডে কে থাকবেন, সেটি একান্তই তাদের বিষয়-এ নিয়ে কারও প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।
আওয়ামী লীগের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন গতকাল সোমবার বিকালে জানিয়েছে, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারে তারেক রহমানের স্কাইপে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার নেই।
তারেক রহমানের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়াটা বৈধ কি অবৈধ-এ নিয়ে যখন মতবিরোধ চলছে, তখন অনলাইন যোগাযোগব্যবস্থার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্কাইপে ডটকম বাংলাদেশে বন্ধ করে দিয়েছে ‘বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন’ (বিটিআরসি)।
বিটিআরসির একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। সে কারণে স্কাইপে বন্ধ করা হয়েছে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের একটি সূত্র জানিয়ে, বিটিআরসির ওই নির্দেশনা পাওয়ার পর তারা স্কাইপে বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্কাইপের সব সেবা বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, শুধু স্কাইপে বন্ধ করা হলেও ভিডিও কনফারেন্স করার মতো অন্যান্য অনলাইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রয়েছে।
এদিকে সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, বিকাল ৩টা থেকেই চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এর পর থেকে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের স্কাইপে কথোপকথনও বন্ধ রয়েছে।
দুর্নীতির দুই মামলায় এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় সাজার রায় মাথায় নিয়ে তারেক রহমান লন্ডনে বসবাস করছেন।
আইনজ্ঞরা বলছেন, সংবিধানে আছে-নৈতিক স্খলনের কারণে কারও যদি দুই বছরের বেশি সাজা হয়, তা হলে সাজা শেষ হওয়ার পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না।
কিন্তু দণ্ডপ্রাপ্ত বা পলাতক ব্যক্তি স্কাইপে ব্যবহার বা অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করে যদি যোগাযোগ করে, সে ক্ষেত্রে ওই বিষয়ক কোনো আইন নির্বাচন কমিশনে নেই, দেশেও কোনো আইন তৈরি করে নির্বাচন কমিশনকে দেয়া হয়নি।
বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ৯১ই ধারায় বলা হয়েছে-এ অধ্যাদেশে কিছু বলা না হলেও যদি কমিশন এমন কোনো তথ্য পায় বা লিখিত অভিযোগ পায় যেখানে কোনো প্রার্থী বা এজেন্ট প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বেআইনি কর্মকাণ্ড বা আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে, তা হলে কমিশন সেটি তদন্ত করার আদেশ দিতে পারবে।
সেখানে অভিযুক্তের বক্তব্য শুনতে হবে এবং অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তার প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে। তারেক রহমান এ নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ নেই বলেও জানান বিশ্লেষকরা।