নড়াইল-২ আসনে নৌকা প্রতীক পেতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন বাংলাদেশের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। কিন্তু দলের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, মাশরাফিকে ঢাকা-১৩ আসনে দলীয় প্রার্থী করা হতে পারে। এ আসনের বর্তমান এমপি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানককে নিয়ে নতুন কিছু ভাবা হচ্ছে।
আবার ঢাকা-১৮ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুনের আসনটি মহাজোটের একজন প্রভাবশালী প্রার্থীর জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। তবে দলীয় প্রার্থী তালিকায় তিনি রয়েছেন বলে জানা গেছে। একইভাবে ফরিদপুর-১ আসনের এমপি ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানের আসনে দলীয় মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। এ আসনে নতুন মুখ আসার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। মনোনয়ন তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন মাদারীপুর-৩ আসনের এমপি ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ভুইয়া মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। এই দুই আসনে নতুন মুখ হিসেবে যুক্ত হয়েছেন যথাক্রমে দলের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ইকবাল হোসেন অপু।
দলের শীর্ষ নেতারা জানান, ৩০০ আসনের চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকায় তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। বর্তমান সংসদের অধিকাংশ সদস্যই থাকছেন এবারের ভোটযুদ্ধে। এখন শেষ মুহূর্তের নানা হিসাব-নিকাশ চলছে আওয়ামী লীগে। জোটগত প্রার্থী ঘোষণা করা না হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা আজ সন্ধ্যায় ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কোনো কারণে আজ ঘোষণা না করা হলে ২৪ তারিখের পর করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতা।
দায়িত্বশীল নেতারা জানান, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে এ তালিকা পরিবর্তন ও পরিমার্জনের কিছুটা সম্ভাবনা আছে। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
সূত্রমতে, শুধু নিজ দল আওয়ামী লীগের মনোনয়নই নয়, মহাজোট নেত্রী হিসেবে মহাজোটের প্রার্থীও চূড়ান্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিটি আসনে কোন প্রার্থী বা কোন দলের কী অবস্থান সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তিনি। যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর শক্তিশালী অবস্থান আছে, সেখানে আওয়ামী লীগকে এবং যেখানে মহাজোটের প্রার্থীর অবস্থান ভালো, সেখানে আসন ভাগাভাগি করা হবে। গতকাল বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদ সভাপতি হাসানুল ইক ইনু। তাদের সঙ্গে আসন নিয়ে কথা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, এবার দলের মনোনয়নের তালিকায় নতুন মুখ হিসেবে রয়েছেন সাবেক আইজিপি ও সচিব নূর মোহাম্মদ, চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়ের মঞ্জুরুল আলম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারও গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচন করবেন।
এ ছাড়াও মনোনয়ন তালিকায় যারা মনোনীত হয়েছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, আমির হোসেন আমু ঝালকাঠি-২, তোফায়েল আহমেদ ভোলা-১, ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী-৫, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ-১, শেখ ফজলুল করিম সেলিম গোপালগঞ্জ-২, কাজী জাফর উল্লাহ ফরিদপুর-৪, মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ-১, রমেশ চন্দ্র সেন ঠাকুরগাঁও-১, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ফরিদপুর-৩, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান গোপালগঞ্জ-১, ড. আবদুর রাজ্জাক টাঙ্গাইল-১, মাহবুব-উল আলম হানিফ কুষ্টিয়া-৩, নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন মাদারীপুর-১, শাজাহান খান মাদারীপুর-২, মির্জা আজম জামালপুর-৩, অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪, ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু কুমিল্লা-৫, আ হ ম মুস্তফা কামাল লোটাস কুমিল্লা-১০, আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার কুমিল্লা-৬, অধ্যাপক আলী আশরাফ কুমিল্লা-৭, মুজিবুল হক কুমিল্লা-১১, এইচ এম ইব্রাহিম নোয়াখালী-১, একরামুল করিম চৌধুরী নোয়াখালী-৪, নসরুল হামিদ বিপু ঢাকা-৩, হাবিবুর রহমান মোল্লা ঢাকা-৫, হাজী মোহাম্মদ সেলিম ঢাকা-৭, সাবের হোসেন চৌধুরী ঢাকা-৯, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা-১০, এ কে এম রহমতুল্লাহ ঢাকা-১১, আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকা-১২, আসলামুল হক আসলাম ঢাকা-১৪, কামাল আহমেদ মজুমদার ঢাকা-১৫, ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ঢাকা-১৬, নজরুল ইসলাম বাবু নারায়ণগঞ্জ-২, এ কে এম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪, কাজী নাবিল আহমেদ যশোর-৩, ইসমাত আরা সাদেক যশোর-৬, আবদুস সালাম মুর্শেদী খুলনা-৪, এসএম জগলুল হায়দার সাতক্ষীরা-৪, অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বরগুনা-১, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ভোলা-৩, আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব ভোলা-৪, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বরিশাল-১, অ্যাডভোকেট তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস বরিশাল-২, পংকজ দেবনাথ বরিশাল-৪, জেবুন্নেছা আফরোজ বরিশাল-৫, ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না সিরাজগঞ্জ-২, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন চুয়াডাঙ্গা-১, হাসান ইমাম খান টাঙ্গাইল-৪, ছানোয়ার হোসেন টাঙ্গাইল-৫, খন্দকার আবদুল বাতেন টাঙ্গাইল-৬, দবিরুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও-২, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দিনাজপুর-২, ইকবালুর রহিম দিনাজপুর-৩, আবুল হাসান মাহমুদ আলী দিনাজপুর-৪, মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার দিনাজপুর-৫, আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২, টিপু মুনশি রংপুর-৪, এইচ এন আশিকুর রহমান রংপুর-৫, ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রংপুর-৬, মাহাবুব আরা বেগম গিনি গাইবান্ধা-২, শামসুল আলম দুদু জয়পুরহাট-১, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জয়পুরহাট-২, আবদুল মান্নান বগুড়া-১, হাবিবুর রহমান বগুড়া-৫, ইসরাফিল আলম নওগাঁ-৬, ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী-১, আয়েন উদ্দিন রাজশাহী-৩, শাহরিয়ার আলম রাজশাহী-৬, জুনাইদ আহমেদ পলক নাটোর-৩, রেজুওয়ান আহমেদ তৌফিক কিশোরগঞ্জ-৪, নাজমুল হাসান পাপন কিশোরগঞ্জ-৬, এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় মানিকগঞ্জ-১, জাহিদ মালেক স্বপন মানিকগঞ্জ-৩, সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি মুন্সীগঞ্জ-২, অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস মুন্সীগঞ্জ-৩, আতিউর রহমান আতিক শেরপুর-১, মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২, জুয়েল আরেং ময়মনসিংহ-১, জয়া সেনগুপ্তা সুনামগঞ্জ-২, এম এ মান্নান সুনামগঞ্জ-৩, ইমরান আহমদ সিলেট-৪, সৈয়দা সায়রা মহসিন মৌলভীবাজার-৩, উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ মৌলভীবাজার-৪, এ কে এম শাহজাহান কামাল লক্ষ্মীপুর-৩, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রাম-১, ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রাম-৭, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ চট্টগ্রাম-১৩।