ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির জন্য মাহমুদউল্লাহকে অপেক্ষা করতে হলো ৮ বছর! ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টন টেস্টে ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরিটি (১১৫ রান) করেছিলেন তিনি। তিন অংকে পৌঁছতে রিয়াদ খেলেছেন ১২২ বল এবং হাঁকিয়েছেন ৪টি চার, ২টি ছক্কা।
মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির সাথে সাথেই চা বিরতি দেওয়া হয়। বাংলদেশও বিশাল লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২২৪ রান। লিড হয়েছে ৪৪২ রানের। এই ম্যাচ জিততে হলে জিম্বাবুয়েকে করতে হবে ৪৪৩ রান। যা এক কথায় বলতে গেলে অসম্ভব! ম্যাচ ড্র করতে হলেও খেলতে হবে দেড় দিন, চার সেশন। মিরপুরের ঘূর্ণি উইকেটে সেটা কতটুকু সম্ভব হবে তা নির্ভর করছে বাংলাদেশি স্পিনারদের ওপর।
ঢাকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে ফলো অন করায়নি বাংলাদেশ। ২১৮ রানের বড় লিড পেয়েও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে মাহমুদউল্লাহর দল। কিন্তু মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনের খেলা শুরুতেই উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৩ রান করে জার্ভিসের বলে মাভুতার তালুবন্দি হন ইমরুল কায়েস। অপর ওপেনার লিটন দাসও নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। জার্ভিসের বলেই বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৬ রান করে।
এই বিপদের মাঝে আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক (১) ভরসা দিতে পারেননি। ত্রিপানোর বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন উইকেটকিপার চাকাভার গ্লাভসে। আগের ইনিংষের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিমও আজ ব্যর্থ। ৭ রান করে ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ ত্রিপানোর দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হলে ২৫ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর অভিষিক্ত মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রচণ্ড চাপের মাঝে ৯১ রানে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মিঠুন। মাহমুদউল্লাহও ১০মাস এবং ১০ ইনিংস পর তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ৮৩* রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। গত ১০ ইনিংসে তার রান ছিল ২৮*, ১৭, ৬, ০, ১৫, ০, ৪, ০, ১৬, ৩৬। মিঠুন ৬৭ রান করে ত্রিপানোকে ছক্কা মারতে গিয়ে মাভুতার তালুবন্দি হলে এই দুজনের ১১৮ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙে।
৫ রান করে আরিফুল হক উইলিয়ামসকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান। আগের ইনিংসে অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরি করা মেহেদী মিরাজকে এলবিডাব্লিউ ঘোষণা করলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। এরপর তিনি দারুণ সঙ্গ দিয়ে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে। লিড চারশ ছাড়িয়ে যায়। অপেক্ষা ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সেঞ্চুরির। দীর্ঘ ৮ বছর পর ১২২ বলে ৪টি চার এবং ২টি ছক্কায় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। ৬ উইকেটে ২২৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ১০১* এবং মেহেদী মিরাজ ২৭* রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ৩০৪ রানে অল-আউট হয় জিম্বাবুয়ে। দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকান ব্রেন্ডন টেইলর। তার ১১০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি থামিয়ে দেন মেহেদী মিরাজ। টেইলরের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়া পিটার মুর সেঞ্চুরিবঞ্চিত হন। তার ৮৩ রানের ইনিংসটি থামে আরিফুল হকের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে। টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নেন তাইজুল ইসলাম।
সোমবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে ৭ উইকেটে ৫২২ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। মুমিনুল ইসলাম খেলেন ১৬১ রানের ইনিংস। আর মুশফিকুর রহিম ১৬ টি বাউন্ডারিতে খেলেন অপরাজিত ২১৯* রানের ব্যক্তিগত এবং বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া মেহেদী মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৬৮* রানে।