২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১১:০৬

জোড়া সেঞ্চুরিতে দিন শেষে চালকের আসনে বাংলাদেশ।

সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে বিধ্বস্ত হওয়ার পর আজ থেকে শুরু হওয়া ঢাকা টেস্টেও শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। ২৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলকে খাদ থেকে টেনে তুলেন মুশফিকুর রহিম এবং মুমিনুল হক। চতুর্থ উইকেটে গড়েন ২৬৬ রানের দুর্দান্ত জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ছেন। তাদের ব্যাটিং দাপটে দিনশেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩০৩ রান। যদিও দিনশেষে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় স্বাগতিক দল।

রাজধানীর মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ রবিবার সিরিজ বাঁচানোর মিশনে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ১৩ রানে জার্ভিসের বলে চাকাভার গ্লাভসবন্দি হয়ে কোনো রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ইমরুল কায়েস। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া ইমরুলের সঙ্গে যোগ দেন নিজেকে হারিয়ে ফেলা মুমিনুল হক।

জার্ভিসের দ্বিতীয় শিকার হন অপর ওপেনার লিটন দাস। ইনিংস বড় করার সুযোগ পেয়েও মাত্র ৯ রান করে তিনি ক্যাচ তুলে দেন মাভুতার হাতে। ৩ রানের মধ্যে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। অভিষেক টেস্টে মোহাম্মদ মিঠুন ব্যাট হাতে এমন সময় নামলেন, যখন বাংলাদেশ দল মহাবিপদে। কিন্তু শূন্য রানে আউট হয়ে দলের বিপর্যয় আরও বাড়িয়ে দিলেন মিঠুন। ত্রিপানোর বলে তিনি ব্রেন্ডন টেইলরের তালুবন্দি হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

দলের এমন বিপদের মুহূর্তে হাল ধরেন মুমিনুল হক এবং মুশফিকুর রহিম। দুজনের জুটিতে একশ পার করে বাংলাদেশ। ৯২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল হক। তাদের জুটি শতরান ছাড়িয়ে যায়। কঠিন সময় পার করে সাবলীল খেলতে থাকেন দুজন। এর মাঝেই ১৫০ বলে ১২ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের ৭ম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল হক। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি।

মুমিনুলের পর সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিকও। ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরিতে পৌঁছতে ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ খেলেন ১৮৭ বল। হাঁকান ৮টি বাউন্ডারি। দিনের খেলার শেষভাগে দলকে সুবিধাজক অবস্থানে রেখে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন মুমিনুল হক। তার ২৪৭ বলে ১৬১ রানের অসাধারণ ইনিংসে ছিল ১৯টি বাউন্ডারি। চাতারার বলে ব্রায়ান চারির তালুবন্দি হয়ে মুমিনুল যখন প্যাভিলিয়নে ফিরেন, বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ২৯২ রান। তার বিদায়ের সঙ্গেই ভাঙল ২৬৬ রানের দুর্দান্ত চতুর্থ উইকেট জুটি।

দিনের তখন বাকী ছিল ৬ ওভার। তাই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর পরিবর্তে উইকেটে আসেন ‘নাইটওয়াচম্যান’ তাইজুল ইসলাম। কিন্তু টিকতে পারেননি। ৪ রান করে জার্ভিসের বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। রিভিউ জিতে তাইজুলকে প্যাভিলিয়নে পাঠায় জিম্বাবুয়ে। দিনের বাকী সময়টা দুই ভায়রা-ভাই মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ নিরাপদে কাটিয়ে দেন। জার্ভিস নিয়েছেন ৩ উইকেট। ১টি করে নিয়েছেন চাতারা এবং ত্রিপানো। মুশফিক ১১১* এবং মাহমুদউল্লাহ ০* রানে অপরাজিত আছেন।

সিলেট টেস্টের মতো ঢাকা টেস্টেও বাংলাদেশ দলে দেখা গেছে নতুন মুখ। অভিষেক হয়েছে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া সৈয়দ খালেদ আহমেদ এবং ওয়ানডে স্পেশালিস্ট মোহাম্মদ মিঠুনের। এছাড়া দীর্ঘ ৯ মাস পর সাদা পোশাকে ফিরেছেন ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। এই তিনজনকে জায়গা করে দিতে বাদ পড়েছেন পেসার আবু জায়েদ চৌধুরী, বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু।

বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, আরিফুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, মুস্তাফিজুর রহমান।

প্রকাশ :নভেম্বর ১১, ২০১৮ ৫:২০ অপরাহ্ণ