সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক ও সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড ঘিরে বিশ্বজুড়ে যখন তুলকালাম চলছে ঠিক সেই সময় বোমা ফাটালেন সৌদি অারবের অন্যতম মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পুলিশের সাবেক প্রধান। তিনি বলেছেন, সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি এখনও বেঁচে থাকতে পারেন।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেয়া এক বার্তায় দুবাই পুলিশের সাবেক প্রধান দাহি খালফান বলেছেন, এখন পর্যন্ত তার মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি, তার ডিএনএ’ও পাওয়া যায়নি এবং তার পরিবারের সদস্যরা শেষকৃত্যও আয়োজন করতে পারেননি। এতে মনে হচ্ছে যে, খাশোগি বেঁচে আছেন।
বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র সংগ্রহের জন্য গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে যান সাংবাদিক জামাল খাশোগি। সেখান থেকে আর বেরিয়ে না আসায় সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে যে, কনস্যুলেটে খুন হয়েছেন সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা এই সাংবাদিক।
মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট খাশোগি এক সময় রাজপরিবারের উপদেষ্টা ছিলেন। পরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
সৌদি আরব খাশোগিকে হত্যার অভিযোগ প্রতিনিয়ত অস্বীকার করে আসছে। তবে ১৭ দিন পর গত ১৯ অক্টোবর বৈশ্বিক চাপ ও সমালোচনার মুখে সৌদি সরকারের এক বিবৃতিতে খাশোগি কনস্যুলেটে মারামারিতে মারা গেছেন বলে স্বীকার করা হয়। তবে তার এই খুন হওয়া নিয়ে প্রতিনিয়ত বিপরীতমুখী তথ্য দিয়েছে সৌদি।
তুরস্ক বলছে, সৌদি ওই সাংবাদিককে কনস্যুলেট ভবনেই হত্যা করা হয়েছে। আর এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়ার জন্য সৌদি থেকে তুরস্কে উড়ে এসেছিল ১৫ সদস্যের বিশেষ কিলিং স্কোয়াড।
এর আগে, মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, ১৫ জনের কিলিং স্কোয়াডের মধ্যে অন্তত ৯ জন সৌদি নিরাপত্তাবাহিনী, সেনাবাহিনী অথবা দেশটির বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সদস্য। খাশোগি নিখোঁজ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন খুনিদের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
এদিকে, তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, জামাল খাশোগিকে হত্যার পর তার মরদেহ এসিডে গলিয়ে ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়েছে। শনিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এক বিবৃতিতে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের কাছে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার রেকর্ডিং পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।