আওয়ামী লীগ ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো সংলাপে বসেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আজকের সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে একজন উপদেষ্টা ও ১০ সদস্যের উপদেষ্টাবিশিষ্ট নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দিলে তা নাকচ হয়ে যায় বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দ্বিতীয় দফা সংলাপে গণভবনে এসে লিখিতভাবে এই প্রস্তাব দেয়। আওয়ামী লীগ ঐক্যফ্রন্টের এ প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। এ ছাড়া সংসদ ভেঙে দেওয়া, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির বিষয়ে সরকার ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একমত হতে পারেনি।
বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন চায়। কিন্তু এটা হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। নির্বাচন পেছানোর কথা না বলতে ঐক্যফ্রন্টকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কাদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও ১০ জন উপদেষ্টার বিষয়ে প্রস্তাব মানা হবে না, কারণও নেই।
ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবের জবাবে আওয়ামী লীগ বলেছে, এটা সংবিধানসম্মত না। এই দাবি মেনে নিলে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। এ সুযোগে তৃতীয় পক্ষে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া সংসদ ভেঙে দেওয়া, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের ৭টি দাবি আবারও জানিয়েছে।
বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফা সংলাপ বেলা দুইটায় শেষ হয়। দুই পক্ষের পৃথক অবস্থানে কোনো পক্ষই ঐকমত্যে আসতে পারেনি বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে।
বেলা সোয়া দুইটার দিকে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা গণভবন থেকে বের হন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন—ঐক্যফ্রন্ট তফসিল পেছানোর কথা বলেছে। তবে আওয়ামী লীগ বা সরকার বলেছে, এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার।
পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন চাইছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন। সেনাবাহিনীর বিচারিক ক্ষমতা থাকবে না। তবে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। সাত দফার বেশির ভাগই প্রধানমন্ত্রী মেনে নিতে সম্মত হয়েছেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তি না, জামিন চেয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ বলেছে, এটা আদালতের বিষয়।