২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:৩০

মার্কিন কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন আজ

দীর্ঘদিনের বাকযুদ্ধের প্রচারণা শেষে আজ মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে। প্রচারণায় এক দল আরেক দলকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছে। প্রচারণায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে চলে যান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

জরিপে ডেমোক্র্যাটরা এগিয়ে থাকলেও গতকাল কয়েকটি মার্কিন মিডিয়া জানিয়েছে, দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ডেমোক্র্যাটদের জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে কমেছে। আবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি মানুষের সমর্থনও আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৪ মিলিয়ন ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন। ৫০০ কোটি ডলারের নির্বাচনে জয়ের আশা করছে দুই দলই।

রবিবারও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। গতকাল তারা শেষ দিনের প্রচারণায় নামেন। দুইজনই নিজ দলের ভোটারদের কেন্দ্রে আসার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রচারণায় সমপ্রতি অভিবাসন ইস্যুকে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, ডেমোক্র্যাটরা কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নিলে সীমান্তের অপরাধ বেড়ে যাবে। আমেরিকার বাইরের মানুষই আমেরিকায় কর্তৃত্ব চালাবে। আর ওবামা বলেছেন, আমেরিকাকে বিভক্ত করবেন না। অনেকবার এমন চেষ্টা হলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি অভিবাসন এবং স্বাস্থ্য বিল নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাজের নিন্দা জানান। তিনি আমেরিকার চরিত্র কেমন হবে তা ব্যালটের মাধ্যমে প্রমাণ দিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। ডেমোক্র্যাটরা মনে করছেন, অভিবাসন ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান তরুণদের ভোট টানতে সহায়তা করবে।

আগাম ভোট
মধ্যবর্তী নির্বাচনে সাধারণত ভোটের হার কম হয়। ২০১৪ সালে ভোটের হার ছিল ৩৭ ভাগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার ভোটের হার বেশি হতে পারে। অভিবাসন এবং স্বাস্থ্য কর্মসূচি ইস্যুতে ভোটাররা বেশি আসবে বলে ধারণা। ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা ভিত্তিক মার্কিন নির্বাচনী প্রকল্পের একটি সূত্র জানিয়েছে, ৩৪ দশমিক ৩ মিলিয়ন আগাম ভোট পড়েছে। ২০১৪ সালে পড়েছিল ২৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন। ওই বছর টেক্সাসে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছিল। ভোটদানে আগ্রহ বাড়াতে প্রচারণা চালিয়েছে ওয়ালমার্ট, লেভিস্ট্রস এবং পে পালের মতো ১৫০ কোম্পানি। আজ রাইড শেয়ারিং কোম্পানি লিফ্ট এবং উবার কম মূল্যে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাবে।

নির্বাচনে কে কী চায়
ডেমোক্র্যাটরা মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। আর রিপাবলিকানরা উচ্চকক্ষ সিনেটে তাদের আধিপত্য আগের চেয়ে বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। অর্থনীতি ভাল থাকায় ডেমোক্র্যাটরা প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় বাড়ছে। আর যেসব সিনেটে নির্বাচন হচ্ছে তার বেশিরভাগই ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ফলে ডেমোক্র্যাটরা কেউ পরাজিত হলে তা উল্টো ট্রাম্পকেই সুবিধা দেবে। ফলে রিপাবলিকানরা সিনেটে তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারেন বা আবার বাড়াতে পারেন। প্রতিনিধি পরিষদে নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে ডেমোক্র্যাটদের ক্যালিফোর্নিয়ায় বেশি নজর দিতে হবে। আর সিনেটে নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে অ্যারিজোনা এবং নেভাদায় জিততে হবে; কিন্তু নর্থ ডাকোটা এবং মিসৌরিতে তাদের হারার আশঙ্কা আছে।

মধ্যবর্তী নির্বাচন কী
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় প্রতি চার বছর পরপর। তবে কংগ্রেসের দুই কক্ষে ভোট হয় প্রেসিডেন্টের মেয়াদের মধ্যবর্তী সময়ে। প্রতিটি মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদের (৪৩৫টি) সবগুলো আসনে ভোট হয়। কারণ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য বা কংগ্রেসম্যানদের মেয়াদ দুই বছর। সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে এবার ৩৫টিতে ভোট হচ্ছে। সিনেটরদের মেয়াদ ৬ বছর। ৩৬টি রাজ্যের গভর্নর পদে নির্বাচন হবে। নতুন কংগ্রেসের অধিবেশন বসবে আগামী জানুয়ারিতে।- বিবিসি

প্রকাশ :নভেম্বর ৬, ২০১৮ ১২:০৮ অপরাহ্ণ