প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের বহুল প্রতিক্ষীত বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হলো তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সবার মনে। গতকাল বৈঠক শেষে গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গণমাধ্যমকে এড়ানোর চেষ্ট করেছেন প্রায় সব নেতাই। পরে অবশ্য আওয়ামী লীগের তরফে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ওবায়দুল কাদের। অন্যদিকে রাতেই নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন ড. কামাল।
তবে সংলাপের বিষয়ে শুক্রবার নয়পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেন, ‘গতকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারি জোটের সংলাপে সরকারের একগুঁয়ে মনোভাব গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের অশনি সংকেত। সংলাপে মানুষের মনে যে আশাবাদ জেগে উঠেছিল, সংলাপ শেষে সেই আশার মুকুল ঝরে যেতে শুরু করেছে। সংলাপ শেষে ৭ দফা দাবির প্রতি সাড়া না দেয়ায় আওয়ামী অনঢ়তায় সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হলো। আওয়ামী লীগ সহিষ্ণুতার শিক্ষা কখনোই গ্রহণ করেনি। ক্ষমতা-স্বার্থের লীলাধিপত্য বজায় রাখতে তারা জনগণকেই ভয় পাচ্ছে। জনগণের মুন্ডুপাতই হচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্য নীতি।’
রিজভী আরও অভিযোগ করেন, ‘সংলাপের জিগির তুলে একদিকে জনগণকে দেখাচ্ছে তারা কত আন্তরিক, অন্যদিকে সমানতালে নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতা অব্যাহত রেখেছে।’
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সংলাপের ভাষণে রাজনৈতিক মামলায় কারা আছেন তাদের তালিকা চেয়েছেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। তার দশ বছরের শাসনামলে বিরোধী দলের কাদের নামে মামলা দিয়ে বারবার কারাগারে ঢোকানো হচ্ছে, সেটি কি প্রধানমন্ত্রীর অজানা?
গতকালের সংলাপে ‘বিশেষ কোনো সমাধান’ না পাওয়ার কথা জানালেও ড. কামাল বলেন, সভা-সমাবেশের ব্যাপারে একটা ভালো কথা বলেছেন (প্রধানমন্ত্রী)। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন , প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ঢাকাসহ সারা দেশে সভা-সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচির ওপর কোনো বাধা থাকবে না। রাজনৈতিক দলসমূহ যে যেখানে সভা করতে চাইবে তাদের কোনো বাধা দেবে না এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য তিনি ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন।
আজকের সংবাদ সম্মেলনি রিজভী আরও বলেন, আগামী ৬ অক্টোবর জনসভা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘জনসভা সফল করতে আগামীকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা পরিষদ, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদকমন্ডলী, অঙ্গসহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকার সাবেক এমপি এবং জনপ্রতিনিধিদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে।’