২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:১২

শিশুর মৃত্যু, ছাত্রীর গায়ে মবিল : জড়িতদের খুঁজে বের করার নির্দেশ

সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘটের সময় বিভিন্ন স্থানে লোকের মুখে পোড়া মবিল দেয়া, অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় শিশু মৃত্যুর ঘটনাসহ শ্রমিকদের বিচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে এ অপরাধে যে সব পরিবহন শ্রমিক জড়িত তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশও দেয়া হয়। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া শুনানির জন্য আগামী ১৮ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে ধর্মঘটের নামে এসব ভয়ঙ্কর ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জের দুই ডেপুটি কমিশনার এবং পুলিশ সুপারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘ধর্মঘট চলাকালে অ্যাম্বুলেন্সে বাধা, শিশুর মৃত্যু, চালকের মুখে, ছাত্রীদের পোশাকে পোড়া মবিল মাখানোর মতো অপরাধের সঙ্গে যে সব পরিবহন শ্রমিক জড়িত তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশের আইজিকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিবহন আইন সংশোধনের নামে শ্রমিকরা গত ২৮ ও ২৯ অক্টোবর দেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডাকে। ধর্মঘট চলাকালে সারাদেশে নৈরাজ্য চালায় পরিবহন শ্রমিকরা। সড়কে চলাচলকারী অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও স্কুলগামী বাস থামিয়ে চালককে মারধোর, কানধরে ওঠবসসহ ছাত্রীদের গায়ে পোড়া মবিল লাগিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া মৌলভীবাজারে হাসপাতালে নেয়ার সময় পথে পথে অ্যাম্বুলেন্সে বাধা দেয়ায় সাত দিন বয়সী এক নবজাতক এবং সুনামগঞ্জে দুই দিন বয়সী আরেক নবজাতককে হাসপাতালে নিতে না পারায় বাবার কোলেই মারা যায়। পরে এ বিষয়গুলো বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হলে তা গতকাল হাইকোর্টের নজরে আনা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে আজ বুধবার রিট দায়ের করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ রিটের শুনানিকালে আদালত বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে হরতাল বা ধর্মঘটের সময় আরেকজন ব্যক্তিকে চলাচলে বাধা দেয়াসহ সাংবাধানিক অধিকার যেন খর্ব না হয় সে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নিশ্চিত করতে বলেছেন। এ ছাড়াও ওই দুইদিনে সারাদেশে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা পুলিশের মহাপরিদর্শককে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’

প্রকাশ :অক্টোবর ৩১, ২০১৮ ৬:৪০ অপরাহ্ণ