সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যায় ন্যায়বিচার চেয়েছেন তার বাগদত্তা হেতিস চেঙ্গিজ। একইসঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে খাশোগির মরদেহের তথ্য প্রকাশ করতে বলেছেন। সোমবার লন্ডনে খাশোগি স্মরণে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোগান বলেছেন, খাশোগিকে হত্যায় জড়িতদের রক্ষার কোনো সুযোগ নেই। অপরাধীদের তদন্তের বাইরে না রাখার জন্য তিনি সৌদি আরবের প্রধান প্রসিকিউটরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের সনদ নিতে গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর থেকে নিখোঁজ হন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। গত ২০ অক্টোবর সৌদি আরব প্রথমবারের মতো স্বীকার করে যে কনস্যুলেট ভবনে মৃত্যু হয়েছে খাশোগির। পরে জানায়, তিনি খুন হয়েছেন। তবে খাশোগির মরদেহের কী হয়েছে এবং কে তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে সে ব্যাপারে কিছু বলেনি সৌদি আরব।
লন্ডনে হেতিস চেঙ্গিজ বলেন, আমি তার (খাশোগির) লাশ দাফন করতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, লাশ কোথায় আছে তা সৌদি আরব জানে। আমার আহ্বানে তাদের সাড়া দেওয়া উচিত। এটা শুধু একজন বাগদত্তার দাবি নয়, এটা মানবিক ও ইসলামি দাবিও। খাশোগির হত্যাকাণ্ড যাতে ধামাচাপা না পড়ে সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি ন্যায়বিচার চাই। যারা জামালকে হত্যা করেছে শুধু তাদের নয়, যারা নির্দেশ দিয়েছে তাদেরও বিচার চাই। এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকা দেখতে চাই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করে হেতিস বলেন, সত্য উন্মোচন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। খাশোগির হত্যা ধামাচাপা দিতে নয়। চার মাস আগে তুরস্কের শিক্ষক হেতিসের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, জামাল খাশোগিকে নিয়ে সৌদি আরবের মিথ্যাচার প্রত্যাখ্যান করা উচিত বিশ্বনেতাদের। জাতিসংঘের আওতায় এ ঘটনার স্বাধীন তদন্ত নিশ্চিতের পাশাপাশি সৌদি আরবের প্রতি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনটি।
অন্যদিকে খাশোগি হত্যার নির্দেশাদাতাকে খুঁজে বের করতে সৌদি আরবের প্রধান প্রসিকিউটরকে আহ্বান জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তিনি বলেন, ১৫ জনকে কে পাঠিয়েছিল, সেটা প্রকাশ করা উচিত। এদিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেট পরিদর্শন করেছেন সৌদি আরবের চিফ প্রসিকিউটর।