ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনে রয়েছে নানাবিধ সুফল। যে ব্যক্তি ভাগ্যকে অবিশ্বাস করলো সে ইসলামি শরিয়তের মূলনীতিসমূহের একটিকে অস্বীকার করলো। আর ভাগ্যকে অস্বীকার করার মাধ্যমে সে কুফরি করলো। পক্ষান্তরে ভাগ্যে বিশ্বাস স্থাপনকারীর জন্য রয়েছে অনেক সুফল।
ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাসস্থাপনকারী ব্যক্তি বিভিন্ন প্রকার নেক আমল ও ভালো গুণ অর্জন করার সুযোগ লাভ করে। যা মানুষের ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে কল্যাণ নিয়ে আসে। ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী ব্যক্তি যে সব গুণ অর্জন করে, সংক্ষেপে সে সবের কিছু বিবরণ উল্লেখ করা হলো-
প্রথমত
> আল্লাহর প্রতি ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
> আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ ভরসা রাখার পাশাপাশি তার পথে ব্যয় করার মানসিকতা তৈরি হয়।
> সব সময় তাঁর ভয় হৃদয়ে জাগ্রত থাকে;
> আল্লাহর প্রতি সুধারণা তৈরি হয়;
> ধৈর্য ও সহনশীলতা বাড়ে;
> নৈরাশ্যতা দূর হয়;
> অল্পে তুষ্ট থাকার গুণ তৈরি হয়।
> সুখে-দুঃখে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করার গুণ তৈরি হয়।
> বাজে গাল-গল্প থেকে নিজেকে মুক্ত রাখে।
> ভালো কাজের দক্ষতা ও তা সম্পাদনে যোগ্যতা তৈরি হয়।
> আত্মার প্রশান্তি সৃষ্টি হয়।
দ্বিতীয়ত
> ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাসী ব্যক্তি জীবনে সঠিক ও সরল পথে পরিচালিত হয়।
> অধিক নেয়ামত লাভেও সে পথভ্রষ্ট হয় না।
> চরম বিপদেও নিরাশ হয় না।
সে নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে যে, তাকে যে বিপদ স্পর্শ করেছে তা (তার পরীক্ষার জন্য) আল্লাহ নির্ধারণ করেছে। তাই সে বিপদে ঘাবড়ায় না, বিচলিত হয় না, বরং ধৈর্য ধারণ করে এবং নেকির আশা করে।
তৃতীয়ত
ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাসী ব্যক্তি পথভ্রষ্টের কারণ ও জীবনের অশুভ কাজ থেকে হেফাজত থাকে। দুনিয়ার যাবতীয় পথভ্রষ্টতা ও অশুভ কাজ তার জন্য সঠিক পথে প্রতিষ্ঠা থাকার স্থায়ী প্রচেষ্টা। নেক কাজ বেশি বেশি করার সূবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দেয়। নাফরমানি ও ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকারও সুযোগ করে দেয়।
সর্বোপরি
নিশ্চয় এটি ঈমানদার ব্যক্তির জন্য সুদৃঢ় অন্তর ও পূর্ণ বিশ্বাসের দ্বারা ভয়ানক ও কঠিন ক্ষতিকর কাজকে প্রতিহত করার মনোভাব তৈরি করে দেয়। কেননা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
`কি চমৎকার! নিশ্চয় মুমিনের সব কাজই ভাল। আর ইহা শুধু মুমিনদের জন্যই খাস। কোনো বিষয় যদি তাকে আনন্দ দেয় তবে সে (আল্লাহর) প্রশংসা করে। ফলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি তাকে কোনো বিপদে পায় বা সে বিপদে পড়ে তবে সে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে তাও তার জন্য কল্যাণকর।’ (মুসলিম)
সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখা। সুখ-দুঃখ সব কিছুকে মেনে নেয়া। উল্লেখিত গুণ ও বিপদে আল্লাহর প্রশংসা ও ধৈর্য ধারণ করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখার মাধ্যমে উল্লেখিত গুণগুলো অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।