আট দফা দাবি না মানলে ফের ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘটে যাবে পরিবহন শ্রমিকরা। ধর্মঘটে যাওয়ার আগে শ্রমিক নেতারা এক সপ্তাহ সময় দিতে চান সরকারকে। এই সময়ের মধ্যে নতুন আইনের কয়েকটি ধারা পরিবর্তন করা না হলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই এই ধর্মঘট ডাকা হতে পারে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা।
জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবি আদায়ে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশ। সড়কে কোনো প্রকার গণপরিবহন না থাকায় বিশেষ করে দিশেহারা চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীরা। জীবনের তাগিদে অনেকে মানুষ পায়ে হেঁটে গন্তেব্যে যাচ্ছেন। অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিকশা চললেও তা যাত্রীর তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। আবার এসব পরিবহনে ভাড়াও বেড়েছে কয়েকগুণ। জনদুর্ভোগ চরমে ওঠলেও এখন পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহারের কোনো আভাস মিলছে না। মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ধর্মঘটের সময়সীমা শেষ হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের বাঁচা-মরার প্রশ্ন নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছি। সরকারকে বেকায়দায় ফেলানো আমাদের কোনো উদ্দেশ্য নয়। আমরা সরকারকে এক সপ্তাহ সময় দিচ্ছি। নইলে ফের ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘটে যাব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।
কাভার্টভ্যান চালক সমিতির সভাপতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য কামারুজ্জামান বলেন, সরকার চাইলে এক ঘণ্টায় সমাধান দিতে পারে। অনেক আইন রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ দিয়ে বাতিল বা সংশোধান করা হয়েছে। শ্রমিকের খবর কেউ নেয় না। হাজার হাজার শ্রমিক রাস্তায় কুকুরের মতো মারা যায়। শ্রমিকের লাশ ছুঁতেও মানা। অথচ ১০৫টি কারণে দুর্ঘটনা ঘটে যার মধ্য ৫টি কারণ চালকের। সব ঠিক না করে শ্রমিকের ওপর গজব নামিয়ে দেয়া কোনো ন্যায়বিচার হতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা মানুষের কষ্ট বুঝতে পারছি। কিন্তু শ্রমিকরা এই পরিস্থিতিতে অসহায়। আইন পরিবর্তন করা না হলে নভেম্বরের শুরুতেই ফের ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘটের ঘোষণা আসবে। এর আগে আমরা সরকারকে আলোচনায় বসার সময় দিতে চাই।