২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:০১

আমাদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল, জেলাসি ছিল না: জেমস

বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীত জগতের এক বিস্ময় জাগানো নাম আইয়ুব বাচ্চু। যার কণ্ঠের জাদু আর গিটারের মুর্ছনা ভক্ত-শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখতো। বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করেই না ফেরার দেশে চলে যান এই গায়ক ও সংগীত পরিচালক। দেশের ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি গায়ক ও গিটার বাদক আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন আরেক জনপ্রিয় রকস্টার জেমস। নগরবাউলের এই গায়ক আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে বলেন, তিনি বাংলা সংগীতের কিংবদন্তি।

তার সঙ্গে ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে আমার। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর আমরা একে অপরের সুখে-দুঃখে, মানে-অভিমানে কাটিয়েছি। একসঙ্গে প্রচুর শো করেছি, গান করেছি, দেশ-বিদেশে ঘুরেছি। অথচ তিনি চলে গেলেন। সকালে এ খবরটি শোনার পরই উড়িয়ে দিয়েছিলাম। বিশ্বাস করতে চাইছিলাম না এমন খবর। চাইলাম এগুলো গুজবই হোক। সত্যি যেন না হয়। অথচ একটু পরই জানলাম এটাই সত্যি। তারপরও আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।’ বলছিলেন নগর বাউল জেমস।

জেমস আরও বলেন, আইয়ুব বাচ্চু ভাইয়ের গানই তাকে জীবন্ত করে রাখবে। উনি অত্যন্ত উদার মনের মানুষ ছিলেন। প্রচণ্ড রসাত্মবোধ ছিল তার মধ্যে। ওনার সাথে আমার যে সম্পর্কটা সেটা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। বিভিন্ন সময়ে কারণে-অকারণে আমরা একজন আরেকজনের পাশে সবসময় ছিলাম। সম্পর্কের এই গভীরতার কথা কখনও বোঝাতে পারবো না। কেউ হয়তো জানবেও না আমাদের হৃদয়ে একে অপরের প্রতি কতটা জায়গা।’

জেমস বলেন, ‘ আমাদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল। মিডিয়া আমাদের সম্পর্কের বিচার কীভাবে করছে সেটা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। ভালো গান তৈরির প্রতিযোগিতা আমরা সবসময় করেছি। এখানে ব্যক্তিগত কোনও জেলাসি ছিলো না। আপনারা হয়তো অনেকেই দেখেছেন, আমাদের যখন যেখানে দেখা হয়েছে চারপাশ অগ্রাহ্য করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছি পরম ভালোবাসায়। আড্ডায় মেতেছি। এসব টান কিংবা হিডেন সম্পর্কের বিষয়গুলো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। করতেও চাই না।’

ঢাকার বাইরে আছেন জেমস। তাই ছুটে যেতে পারেননি স্কয়ার হাসপাতালে রাখা আইয়ুব বাচ্চুর লাশের পাশে। এটা নিয়েও আক্ষেপ প্রকাশ করলেন এ রকস্টার। তিনি বলেন, ‘এখন ঢাকাই নেই আমি। বরগুনায় আছি। ঢাকায় থাকলে ছুটে যেতে পারতাম। বরগুনা স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যায় একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে গাইতে হচ্ছে। আমি খবরটি পেয়েই মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের (আসাদুজ্জামান নূর) সঙ্গে কথা বলেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজকের কনসার্টটি উনাকে (আইয়ুব বাচ্চু) ডেডিকেটেড করে করবো। কতটা প্রাণখুলে গাইতে পারবো জানি না।’

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাসায় হার্ট অ্যাটাক করেন আইয়ুব বাচ্চু। তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধার পরে ঢাকায় জানাজা ও পরেরদিন শনিবার চট্টগ্রামে জানাজা শেষে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে তাকে।

প্রকাশ :অক্টোবর ১৮, ২০১৮ ৭:০৪ অপরাহ্ণ