নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার সকালের দিকে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন বলে হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্টার (প্রশাসন ও বিচার) মো. সাব্বির ফয়েজ সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
লতিফুর রহমান ১ মার্চ ১৯৩৬ সালে যশোর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বৃহত্তর যশোরসহ খুলনা বিভাগের তিনিই একমাত্র সৌভাগ্যবান ব্যক্তি ছিলেন যিনি কিছুদিনের জন্যে হলেও দেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন। উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের প্রধান নির্বাহী যা প্রধানমন্ত্রীর সমমর্যাদার।
বিচারপতি লতিফুর রহমান ১৯৫৯ সালের ২৬ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের অধিবাসি ও ঐ এলাকার প্রথম গ্রাজুয়েট পরবর্তীতে পুলিশের ডাইরেক্টর অব এ্যান্টিকরাপশন মরহুম গোলাম সরোয়ার এর তৃতীয় কন্যা মিসেস আয়েশা রহামনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর তার স্ত্রী সংসার ধর্ম পরিচালনার সাথে সাথে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে ইন্টারমিডিয়েট ও ১৯৬৫ সালে বি.এ পাস করেন। তিনি গেন্ডারিয়ার একটি স্কুলে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। তাদের তিন কন্যা সন্তান। শম্পা, রুম্পা ও নিপা।
বিচারপতি লতিফুর রহমান বাংলাদেশের সর্বপ্রথম এ্যাটর্নি জেনারেল এম. এইচ খন্দকারের অধীনে শিক্ষানবিশ হিসেবে ঢাকা হাইকোর্টে কর্মজীবন শুরু করেন। ১২ মার্চ ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য সনদ প্রাপ্ত হন। ১৯৬৪ সালের দিকে তিনি পূর্নাঙ্গ আইনজীবি হিসেবে ঢাকা হাইকোর্টে কার্য পরিচালনা শুরু করেন। প্রথম দুই বছর তিনি এ্যাটর্নি জেনারেলের অধীনে কাজ করার পর ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্টের একজন আইনজীবি হিসেবে যোগ দেন। আইনজীবী থাকাকালে ফৌজদারী, দেওয়ানী, রিট ও নানাবিধ মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনা করতেন। এ সময় তিনি মাঝে মাঝে নিম্ন আদালতে উপস্থিত হতেন।
২১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯ সালে তিনি বারের সদস্য হিসেবে সরাসরি হাইকোর্ট বিভাগে অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে স্থায়ী বিচারক হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। ১৯৯০ সালের ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত তিনি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দশ বছরের বেশি সময় তিনি হাইকোর্ট ডিভিশনে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯০ সালের ১৫ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। প্রধান বিচারপতি হতে অবসর গ্রহণ করেন ২০০১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। তিনি ১৯ বৎসর যাবৎ আইনজীবি এবং ২২ বৎসরের বেশি সময় যাবৎ বিচারক হিসেবে বিচার কাজ পরিচালনা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ও হাইকোর্ট বিভাগে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন ১ বছর ২ মাস। পরে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি ১৫ শপথ গ্রহণ করেন।
দৈনিক দেশজনতা এন/এইচ