পদ্মাসেতুর ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে, যা খুবেই গৌরবের বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় গোলচত্বরে সুধীসমাবেশের ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রথমে পদ্মাসেতুর কাজ আমি শুরু করেছিলাম। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে ফের ক্ষমতায় এসে কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, নিচে রেল ও ওপরে সেতু এমন একটি ডিজাইন তিনি অনুমোদন করেন। তখন বিশ্বব্যাংকসহ অনেকে এগিয়ে এসেছিল কাজটি করার জন্য। কিন্তু দেশের কিছু মানুষ আছে, যারা দেশের স্বার্থ দেখেন না।
গ্রামীণ ব্যাংক মানুষকে ক্ষুদ্র ঋণ দিত, উচ্চাহারে সুদ নিত জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৮৫-৮৬ সাল থেকে ড. ইউনুসের সঙ্গে আমার পরিচয়। তখন তাকে সহায়তা করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, তাকে যদি একটি ফোনের অনুমোদন দেয়া হয়, তবে তার লাভ দিয়ে গ্রামীণ মানুষের উপকার করতে পারতেন। কিন্তু ওই ফোনের কোনো লভ্যাংশ গ্রামীণ ব্যাংক পায়নি।
৯৮ সালে ব্যাংকটি বিপদে পড়লে চারশ কোটি টাকা সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে কোনো ব্যক্তি ৬৯ বছর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারবেন। কিন্তু অনুমোদন ছাড়াই ড. ইউনুস ১০ বছর এমডির পদ দখল করে রাখেন ও সরকারি বেতন তিনি নিতেন।
‘তখন তাকে নোটিশ দেয়া হয়, তিনি আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে এমডি পদ দখল করে রেখেছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, তাকে কখনো অসম্মান করতে চাইনি, তার সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও গওহর রিজভী গিয়ে দেখা করে তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের উপদেষ্টা করে রাখার প্রস্তাব দেন। তিনি তা না মেনে দুটি মামলা করলেন। কিন্তু আইনে দেখা গেল, ষাট বচরের বেশি তিনি এমডি থাকতে পারেন না।
‘ইচ্ছা করলে অবৈধভাবে নেয়া তার ১০ বছরের বেতন নিয়ে নিতে পারত আদালত । আদালত তা নেননি। কিন্তু ড. ইউনুস ক্ষেপে গেলেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনুসকে গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদে রাখতে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিলারি ক্লিনটন ফোন করেছেন, ব্রিটেনের শেরি ব্লেয়ার ফোন করলেন। কিন্তু আমরা বলেছি, এটা আইনে নেই। আইনে পড়ে না। তাকে সম্মান রক্ষার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, সেই সম্মান তিনি রক্ষা করেননি।
‘পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেও কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি বিশ্বব্যাংক।’
শেখ হাসিনা বলেন, তখন আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে এসে হুমকি দেয়া হত, ই্উনুসকে এমডি না রাখলে পদ্মাসেতুতে হেল্প করা হবে না। পরবর্তীতে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করার সিদ্ধান্ত নেই।
এসময় বিস্ময় প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, তাকে কেন একটা ব্যাংকের এমডি থাকতে হবে।