২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:১১

বিএনপি ভোট ছাড়া ক্ষমতায় যেতে চায়

১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, সামনে নির্বাচন; তাই আবারও চক্রান্ত শুরু হয়েছে। বিএনপি ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় যেতে চায়। এজন্য তারা নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করছে। কিন্তু নির্বাচন হবে। নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না।

মঙ্গলবার রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ১৪ দল আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

নাসিম বলেন, বিএনপিকে বলব- নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হোন। আমরা বিনা খেলায় গোল দিতে চাই না, মাঠে খেলে গোল দিতে চাই। বিশ্বকাপে মেসি, নেইমার গোল মিস করতে পারে। কিন্তু শেখ হাসিনা গোল মিস করবেন না। সংবিধান অনুযায়ী সঠিক সময়েই নির্বাচন হবে। নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশ না নেয়, তাহলে তাদের বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ১০ বছর দল ক্ষমতায় আছে। মন্ত্রী, এমপি, নেতাকর্মীদের ভুল হতে পারে। কিন্তু শেখ হাসিনা কাউকে ক্ষমা করেননি। ভুল করলে শাস্তি হয়েছে। তাই জনগণ আবার শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন। দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসাবেন। আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ১৪ দলের ভেতর কোনো বিভেদ নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে। আগামী নির্বাচনেও ১৪ দলের প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মানুষ তাদের নির্বাচিত করবেন। যারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও করে জনগণ তাদের সঙ্গে নেই।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, সামনের নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কোন দিকে যাব। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে আমরা পিছিয়ে যাব। বিএনপি-জামায়াত জোটের সময় রাজশাহী অঞ্চলে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলা ভাইয়ের উত্থান ঘটেছিল। ১৪ দলের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ অঞ্চল শান্তির জনপদে পরিণত হয়েছে। তাই উন্নয়ন এবং শান্তির চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে ১৪ দলের প্রার্থীদের আবারও বিজয়ী করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ১৪ দলের বিরুদ্ধে একটি অপশক্তি ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপশক্তি ভোট বানচালের চেষ্টা করলে তা শক্তভাবে প্রতিরোধ করবে ১৪ দল।

তিনি বলেন, রাজশাহীতে নৌকা দুর্জয় শক্তিতে পরিণত হয়েছে। ভোটাররা শেখ হাসিনার প্রার্থীকে বিজয়ী করে রাজশাহীর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন। জনসভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া এবং সাম্যবাদী দলের সভাপতি দিলীপ বড়–য়াও বক্তব্য দেন।

রাজশাহী ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সদর আসনের এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৪ দলের কেন্দ্রীয় এবং বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের নেতারা জনসভায় উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও জাসদের আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী জনসভা পরিচালনা করেন।

নির্বাচনের আগেই ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ : জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এ কথা জানান। রামেক হাসপাতালের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সর্বত্র আমরা স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছি। আগে নার্সের সংকট ছিল। গত কয়েক বছরে ১০ থেকে ১৫ হাজার নার্স আমরা নিয়োগ দিয়েছি। উপজেলা পর্যায়ে কিছু চিকিৎসক সংকট আছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই আমরা ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিতে পারব। এ নিয়োগ সম্পন্ন করে আমরা সমস্যার সমাধান করব।

মন্ত্রী বলেন, দেশে প্রায় ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চলছে। হাজারেরও বেশি মডেল ক্লিনিক হয়েছে। সেখানে গরিব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হয়। আমরা এটা করেছি। আমরা ১০ লাখ রোহিঙ্গার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছি। তাদের সন্তানদের পোলিও খাইয়েছি, টিকা দিয়েছি। এটা চাট্টিখানি কথা নয়। দেশের স্বাস্থ্যসেবা এখন একটা মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মোহাম্মদ নাসিম সেবার মানসিকতায় চিকিৎসকদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে হাসপাতালের উন্নয়নে নানা প্রতিশ্র“তি দেন। এর মধ্যে ঘোষণা দেন হাসপাতালের চারতলা একটি ভবনকে ১০ তলায় উন্নীত করার। এছাড়া তিনি সন্ধানীর রামেক হাসপাতাল ইউনিটকে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেয়ারও ঘোষণা দেন। ঢাকায় গিয়ে এই অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসার জন্য তিনি সন্ধানীর সদস্যদের বলেন। সভায় অন্যদের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বক্তৃতা করেন। উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আখতার জাহান, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. মাসুম হাবিব, রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান প্রমুখ।

প্রকাশ :অক্টোবর ১০, ২০১৮ ১২:৪৭ অপরাহ্ণ