নিজস্ব প্রতিবেদক:
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পর থেকে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে এতদিন বিএনপি সোচ্চার থাকলেও তা থেকে ইউটার্ন নিয়েছে দলটি। এখন তাদের দাবি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের।
রোববার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় আগামী একাদশ নির্বাচন এবং সরকার গঠন করতে পারলে লক্ষ্য কী হবে তা নিয়ে দলটি তাদের অবস্থান তুলে ধরে। এতে তারা নির্দলীয় সরকারের দাবির পরিবর্তে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে।
জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের পক্ষে ৭টি দাবি এবং ১২টি লক্ষ্য উল্লেখ করে দুই দিনের সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদানের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে সংশোধনী দিয়ে ইমেইলে ৮ দাবির কথা উল্লেখ করে বিএনপি।
বিএনপি ঘোষিত দাবিনামায় বলা হয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সেই লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে নিম্নবর্ণিত দাবিসমূহ পূরণ করতে হবে।
(১) দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার
(২) জাতীয় সংসদ বাতিল করা
(৩) সরকারের পদত্যাগ ও সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা
(৪) যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে
(৫) সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ম্যাজেস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্রবাহিনী নিয়োগ নিশ্চিত করা
(৬) নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার বিধান নিশ্চিত করা
(৭) নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাদের ওপর কোনো বিধি-নিষেধ আরোপ না করা
(৮) ক) দেশের বিরোধী-রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি, সাজা বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার
(খ) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনী ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সকল রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনো মামলা না দেয়ার নিশ্চয়তা
(গ) পুরনো মামলায় কাউকে গ্রেফতার না করার নিশ্চয়তা
(ঘ) কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিকসহ সকলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা।