নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘বিশ্ব শান্তির জন্য বিশ্ব নেতাদের সব বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি করতে হবে। শান্তি এখনও অধরা। তাই এর কোনো বিকল্প নেই।’
জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সোমবার নেলসন ম্যান্ডেলা শান্তি সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার জন্য ম্যান্ডেলার মতো নেতারা লড়াই করেছিলেন, এখনো তা সুরক্ষিত হয়নি। বিশ্বের অনেক জায়গায় এখনো মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে।
সব পরিস্থিতিতে দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্ণবাদ এবং অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। মানুষ বৈষম্য, জোরপূর্বক স্থানচ্যুতি, অত্যাচার, এমনকি জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে গণহত্যার শিকার হচ্ছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জাতিগত নির্মূলের শিকার হওয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী শান্তির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে জীবন রক্ষা করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ, মানবাধিকার উন্নয়ন ও উন্নয়নের মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করি।’
নেলসন ম্যান্ডেলাকে নিয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নেলসন ম্যান্ডেলার মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও আমাদেরকে নিপীড়ন থেকে মুক্তি দিয়েছেন এবং আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন।’
সন্ত্রাসবাদের মতো বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবেলায় সন্ত্রাসীদের অর্থ ও অস্ত্রের সরবরাহ বন্ধের জন্য বিশ্বনেতাদের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা।
মেডিসন এভিনিউতে লোটে নিউ ইয়র্ক প্যালেস হোটেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়োজনে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিনে শরণার্থী ও শিক্ষাবিষয়ক দুটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।
সকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শরণার্থী সংকট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় তিনটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রস্তাবগুলো হলো মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আইন ও নীতি বাতিল এবং বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক স্থানান্তরিত করার আসল কারণ খুঁজে বের করতে হবে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নাগরিক সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং প্রয়োজনে তাদের জন্যে একটি সেইফ জোন তৈরি করতে হবে এবং জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে রোহিঙ্গাদেরকে নৃশংসতার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
এ ছাড়া দুপুরে ইউএস চেম্বার অব কমার্সের আয়োজনে একটি গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।