২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:০৬

জামায়াত-বিএনপি দমনে অভিযান, নিহত ৬: মঙ্গলবার হরতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত ও বিএনপি নেতা কর্মীদের ধরতে পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানকালে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে গুলিতে ৬ জামায়াত কর্মী নিহত হয়েছে।

এর মধ্যে দেবহাটার পদ্মশাঁখরায় দুইজন, সখিপুরে দুইজন এবং সদরের দুইজন নিহত হয়েছেন। সদরে নিহত দু’জন হলেন সাতানি গ্রামের আহাদ মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর মোল্লা (২৫), শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের ইলিয়াস সরদারের ছেলে সায়েববাবু। অপর চারজনের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

অভিযানকালে ভোমরা ও দেবহাটার পারুলিয়ায় বিএনপি জামায়াতের কমপক্ষে ২০টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে হত্যাকান্ড, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে আগামীকাল জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াত। জামায়াতের জেলা সেক্রেটারী নুরুল হুদা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির দাবি করেন, বিভিন্ন এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পাঁচজন নিহত হয়। অভিযানের সময় দেবহাটা উপজেলা থেকে ছয়জন, কলারোয়া উপজেলা থেকে তিনজন, সদরের আগর দাড়ি এলাকা থেকে ২ জন ও ভোমরা এলাকা থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতারের পর পাওয়া যায়নি বলে পরিবার দাবি করেছে। তারা হলেন, সদরের শাকরা এলাকার আব্দুল আহাদের ছেলে শফিকুল ইসলাম, ভোমরা এলাকার আনারুলের ছেলে রবিউল ইসলাম এবং কোমরপুরের মুছা গাজীর দুই ছেলে রেজাউল ইসলাম ও আহসানুল্লাহ। ধারণা করা হচেছ তাদেরে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রাতে গ্রেফতারের পর তাদের কোন খোঁজ খবর জানে না পরিবারগুলো। সদর জামায়াতের আমারী হাবিবুর রহমান জানান,তারা সকলেই জামায়াতের কর্মী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে এক যোগে জেলার একাধিক স্থানে পুলিশ-বিজিবির সমন্বয়ে বিএনপি জামায়াত দমনে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। বাহিনীর সদস্যরা জামায়াত অধ্যুষিত আগরদাড়ি এলাকায় প্রবেশ করতে চাইলে সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে  ও সড়ক বিচিছন্ন করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে স্থানীয়রা। । পুলিশ সড়কে ফেলা গাছের গুড়ি সরিয়ে সামনে যেতে চাইলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় পুলিশ গুলি করলে এক জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে সকালে সদরের কাতনদা এলাকায় সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেকের বাড়ি ঘিরে ফেলে। তাকে না পেয়ে তার বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এতে ক্ষিপ্ত জনতা রাজপথে এসে প্রতিবাদ জানায়।

রাত ১২টার দিকে সদরের ভোমরা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ বিজিবি। বাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় বিএনপি নেতা নুর ইসলামের বাড়ি ভাঙচুর করে। একই সময়ে বিএনপি জামায়াত সন্দেহে কোমরপুর  চৌধুরিপাড়া এলাকার, মুসা,বাবরি এবং বাদেল জেলের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। ভাঙচুর করা হয় মনোয়ার হোসেনের বাড়ি ঘর। স্থানীয়রা জানান, এসব বাড়িঘরে হামলা চালাতে স্থানীয় আ’লীগ নেতারা পুলিশ বিজিবিকে সহযোগিতা করে।

সকাল ৬টার দিকে যৌথবাহিনীর এ গ্রুপটি দেবহাটার পারুলিয়া ও সখিপুর এলাকায় অভিযান চালায়। তারা উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাকিলের বাড়ি ভাঙচুর করে। এছাড়া পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বর আব্দুল গফফর এবং তার ভাই বর্তমান মেম্বর রফিকুল ইসলামের বাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ সময় এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুললে সংঘর্ষ হয়। এখানে যৌথবাহিনীর গুলিতে অজ্ঞাত দুজন নিহত হন। এছাড়া আবদুর রউফ (৩২) ও রিয়াজুল ইসলাম (৩৫) নামের দুইজন গুলিবিদ্ধ হন।

দৈনিক দেশজনতা/এমএম

প্রকাশ :জুন ৫, ২০১৭ ১২:৩৮ অপরাহ্ণ