অনলাইন ডেস্ক:
সাম্প্রতিক কিছু বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ‘বাদানুবাদ’ হয়েছে।
রোববার আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ১৪ দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনার জন্য মূলত এ বৈঠকে বসেন ১৪ দলের নেতারা। তবে বৈঠকের অনির্ধারিত আলোচনায় সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়েও কথা ওঠে।
জোট শরিকদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে ভাস্কর্য অপসারণের পর দেখলাম আমাদের জোটের অনেকেই একেক রকম কথা বলছেন। পত্রিকায় দেখলাম অনেকে এমনটাও বলেছেন যে, হেফাজতের কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করেছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘১৪ দলীয় জোটের নেতা দেশের সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তাই এই জোটে থেকে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দেওয়া ঠিক না। এতে মানুষের কাছে খারাপ বার্তা যায়।’
তিনি জোট শরিকদের বুঝে-শুনে কথা বলার আহ্বান জানান। হানিফের এমন বক্তব্যের সমর্থন জানান বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতারা।
জবাবে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘১৪ দলের নীতি ও আদর্শকে সমুন্নত রেখেই ওয়ার্কার্স পার্টি বিভিন্ন ইস্যুতে মন্তব্য করে থাকে। এবারো সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্য অপসারণের পর ওয়ার্কার্স পার্টি পলিটব্যুরোর স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ডেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করে।’
তিনি বলেন, ‘ওয়ার্কার্স পার্টি যেন-তেন পার্টি নয়, পার্টি যা বলে দায়িত্ব নিয়ে বলে।’ আওয়ামী লীগ নেতাদের জেনে-বুঝে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত জাসদের একাংশের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদত ডা. শাহাদাত হোসেনসহ বাম দলের নেতারা এ আলোচনায় অংশ নেন।
তারা হানিফ ও বাদশা উভয়ের বক্তব্যই ঠিক রয়েছে মন্তব্য করে এখানে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
সভায় ইসলামিক ফ্রন্টকে ১৪ দলে অর্ন্তভুক্ত করার বিষয়ে কথা তোলেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল। ইসলামিক ফ্রন্টের গঠনতন্ত্র ১৪ দলের মূলনীতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ কিনা, তাদের জোটে নেওয়ার আগে সেটা যাচাইয়ের পরামর্শ দেন তিনি।
জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণের সুবিধা ও জনমতের কথা বিবেচনা করে বাজেটে সংশোধনের প্রয়োজন আছে। এ লক্ষ্যে আমরা আমানতের আবগারি শুল্ক এবং সারচার্জ প্রত্যাহার করার দাবি করেছি।’
জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ নাসিম, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এস এম কামাল হোসেন, শাহে আলম মুরাদ, কামরুল আহসান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির ডা. শাহাদাত হোসেন, বাসদের একাংশের রেজাউর রশিদ খান প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা/এমএম