নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের তেজকুনীপাড়া এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠা ১২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান জানান, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় রোববার ১২ জন শিবির কর্মীকে (শিক্ষার্থী) গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে নিরাপদ সড়কের আন্দোলন চলাকালে গুজব সৃষ্টিকারীদের অন্যতম হোতা তারেক আজিজ রয়েছে।
গ্রেফতার অন্যরা হলেন তারেক, জাহাঙ্গীর আলম, মো. মোজাহিদুল ইসলাম, মো. আল আমিন, জহিরুল ইসলাম, মো. বোরহান উদ্দিন, ইফতেখার আলম, মেহেদী হাসান রাজিব, মো. মাহফুজ, সাইফুল্লাহ ও রায়হানুল আবেদিন।
তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের মনোগ্রামসহ ১২ সেট ইউনিফর্ম, ১৩ টি ফিতাসহ আইডি কার্ড, হ্যান্ডমাইক, ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাস, হাতুড়ি, স্ক্রু ড্রাইভার, তিনটি ল্যাপটপ, ইসলামি ছাত্র শিবিরের কর্ম পদ্ধতির বিভিন্ন ফর্ম, শিবিরের কিশোর কণ্ঠ ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন ইসলামী বই, বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে লেখা ডায়েরি ও ফেসবুকে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওসহ ছবি উদ্ধার করা হয়েছে।
উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, তারা গত ২৯ আগস্ট শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন উসকানিমূলক লেখা/পোস্ট/ফটো/ভিডিও’র মাধ্যমে গুজব ছড়ায়।
তিনি বলেন, গত ৬ আগস্ট বেলা পৌনে ১২টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যলয়ের বহিরাগত ছাত্ররা ৪০০ থেকে ৫০০জন একত্রিত হয়ে আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সরকারবিরোধী বিভিন্ন উত্তেজনাকর স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা রাস্তা বন্ধ করে ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। উশৃঙ্খল ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
মাসুদুর রহমান জানান, ছাত্রদের ইট পাটকেলের আঘাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পিআই আবু হাজ্জাজ, এসআই ইমাম হোসেন, এএসআই আজাদ ও ইব্রাহিমসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করা ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম মূল হোতা তারেক আজিজ ফেসবুক টাইম লাইনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত করতো।
গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) ক্যান্টনমেন্ট জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার হান্নানুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রোববার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে (ক্র্যাব) আয়োজিত এক সংবাদ এই ১২ শিক্ষার্থীর স্বজনরা জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর ১২ শিক্ষার্থীসহ আরও কয়েকজনকে তেজগাঁও ও মহাখালী এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। অনেককে ছেড়ে দিলেও ১২ জনকে আটক রাখা হয়েছে। আটক শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা কখনও আশ্বাস দিচ্ছেন আবার কখনও আটকের কথা অস্বীকার করছেন। যাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাদের মাধ্যমে স্বজনরা জানতে পেরেছেন, তাদের সন্তানদের ডিবি কার্যালয়ে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে।