নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে দেশবাসীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা চরম উৎকণ্ঠায় বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বেগম জিয়া এতটাই গুরুতর অসুস্থ যে, তার বাম হাত ও পা প্রায় অবশ হয়ে যাচ্ছে। চলফেরা দূরের কথা, তিনি উঠে দাঁড়াতেও পারছেন না। সাংবাদিকরা তার এই অবস্থা সচক্ষে দেখে পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।
এতদসত্ত্বেও গতকালও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও কারাকর্তৃপক্ষ একই সুরে বলেছেন বেগম জিয়া ততটা অসুস্থ নন। তারা বলেছেন বেগম জিয়া পূর্বে যেসব রোগে ভুগতেন এখন সেসব রোগেই তিনি ভুগছেন। আওয়ামী লীগ নেতা ও কারাকর্তৃপক্ষের বক্তব্য বেগম জিয়ার অসুস্থতাকে তাচ্ছিল্য করে তার জীবনকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, যা চরম অমানবিকতারই এক নিষ্ঠুর বহিঃপ্রকাশ।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
রিজভী বলেন, বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে হানিফ ও কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিষ্ঠুর রসিকতা। বেগম খালেদা জিয়াকে পরিকল্পিতভাবে নিঃশেষ করে দিতেই আওয়ামী সরকার তাকে চিকিৎসা না দিয়ে নিষ্ঠুর ও অমানবিক পথ বেছে নিয়েছে। বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক এবং সবশেষে আইনজীবীরা তাকে বাঁচানোর জন্য অবিলম্বে ইউনাইটেড হাসপাতাল অথবা বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার কোনো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। বেগম জিয়ার জীবন হুমকির মুখে থাকবে, আর দেশবাসী চেয়ে চেয়ে দেখবেন তা হবে না। কাল বিলম্ব না করে তাকে ইউনাইটেড বা অন্য কোনো বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বেগম জিয়ার চিকিৎিসা নিয়ে টালবাহানার পরিণতি ভাল হবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গণবিচ্ছিন্ন হতে হতে জনগণের কাছ থেকে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। সেজন্য একমাত্র পুলিশই আওয়ামী সরকারের ‘লোকাল গার্ডিয়ান’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশের শাসনভার শেখ হাসিনা একচেটিয়াভাবে ধরে রাখার জন্য ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই চালিয়ে এসেছেন মানুষ গুম, নরহত্যা, বিনা বিচারে আটক ও ক্রসফায়ার। দেশজুড়ে চলছে এখন গায়েবী মামলার ছড়াছড়ি। মৃত ব্যক্তিকেও এখন ককটেল ছুঁড়ে মারতে দেখছে পুলিশ। সরকার কী অদ্ভুত বাহিনীতে পরিণত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।