নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বিচারালয় বসিয়ে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্তকে ‘সংবিধান পরিপন্থী’ বলে অভিযোগ করে সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শিগগিরই রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলেছে বিএনপি।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার একটা বিশেষ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এ প্রজ্ঞাপনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের মামলা শুনানির জন্য ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে আদালত স্থানান্তর করার কথা জানানো হয়েছে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত সংবিধানবিরোধী এবং সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানের ধারা ৩৫(৩) মতে, এ ধরনের মামলা প্রকাশ্যে হতে হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা মনে করেন, এটি ক্যামেরা ট্রায়াল। দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, সর্বোপরি দেশের একজন নাগরিক- তার অধিকার হরণ করা হচ্ছে সংবিধান লঙ্ঘন করে। এর চেয়ে বড় অপরাধ আর হতে পারে না। এটাকে কোনোভাবেই হালকা করে নেওয়ার সুযোগ নেই। তারা অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পরবর্তী কার্যক্রম ঘোষণা করবেন।
পরবর্তী কার্যক্রম কী হতে পারে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, অন্যায় ও বেআইনিভাবে উচ্চতর আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন হওয়ার পরও বিভিন্ন কারসাজির মধ্য দিয়ে তাকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
সাবেক আইনমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সংবিধানের ৩৫(৩)-এ স্পষ্ট করে বলা আছে, ফৌজদারি মামলা প্রকাশ্যে পরিচালনা করতে হবে। কারাগারের অভ্যন্তরে বিচার করার অর্থ হলো ক্যামেরা ট্রায়াল। এটা সংবিধানসম্মত নয়। ৩৫২ ধারায়ও একই কথা লেখা আছে- এ বিচার প্রকাশ্যে হতে হবে। সরকার যেটা করছে সেটা সম্পূর্ণভাবে সংবিধান পরিপন্থী।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোনো আইনি ব্যবস্থা করা যায় কি-না সে ব্যাপারে পর্যালোচনা করে দেখবেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আইনবিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, কায়সার কামাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।