সাহিত্য ডেস্ক:
একাত্তরের বীরাঙ্গনা ও জননীখ্যাত লেখিকা রমা চৌধুরী আর নেই। সোমবার ভোর ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে লাইফসাপোর্টে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
রমা চৌধুরীর দীর্ঘদিনের সহচর ও তার বইয়ের প্রকাশক আলাউদ্দীন খোকন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রোববার সন্ধ্যায় রমা চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে রাতেই তাকে লাইফসাপোর্ট দেয়া হয়। সেখান থেকেই ভোর ৪টার দিকে দিদি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
এদিকে রমা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চট্টগ্রামে। তার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
রমা চৌধুরী ১৯৩৬ সালে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার পোপাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বলা হয়ে থাকে- তিনি দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রথম নারী স্নাতকোত্তর (এমএ)ডিগ্রিধারী। তিনি ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
রমা চৌধুরী ১৯৬২ সালে কক্সবাজার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কর্মজীবন শুরু করেন। পরে দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি বিভিন্ন উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করেন।
চার ছেলে সাগর, টগর, জহর এবং দীপংকরকে নিয়ে ছিল তার সংসার। কিন্তু একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর গুলিতে দু’পুত্র নিহত ছাড়াও দৈহিক নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন তিনি।
পুড়িয়ে দেয়া হয় তার ঘরবাড়ি। তবু জীবনযুদ্ধে হার মানেননি এ বীরাঙ্গনা। শুরু করেন নতুনভাবে পথচলা। লিখে ফেলেন একে একে ১৮টি বই। এসব বই বিক্রি করেই চলত তার সংসার।
কোমরের আঘাত, গলব্লাডার স্টোন, ডায়াবেটিস, অ্যাজমাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি রমা চৌধুরী ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এর পর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।