নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়ায় দেশের সড়ক, নৌ এবং ট্রেন তিন রুটেই বেড়েছে যাত্রী ভোগান্তি। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে লেগে থাকা জ্যাম অসহনীয় কষ্ট দিচ্ছে যাত্রীদের। নৌ পথে নদীর নাব্যতা সংকটের জন্য সকল রুটেই পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে অনেক যানবাহন। এদিকে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারন করেছে কমলাপুরে।
আজ সোমবার সকাল থেকেই ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে কমলাপুর স্টেশনে। প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো ট্রেনগুলো কানায় কানায় পূর্ণ, ফাঁকা নেই ট্রেনের ছাদেও। কাঙ্খিত ট্রেনের অপেক্ষায় প্ল্যাটফর্মে বসে আছেন অসংখ্য যাত্রী। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলোতে। এদিকে সকাল থেকেই প্রায় ট্রেনগুলো বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিটি ট্রেনই দেড় থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। এমনকি কমলাপুরে পৌঁছাতেও ট্রেনের বিলম্ব হচ্ছে। এতে স্টেশনে গরমে কাহিল হয়ে পড়ছেন অনেকেই। কেউ কেউ গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, শেষ সময়ে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে ট্রেনগুলো ধীর গতিতে চলছে। আর অনেক ট্রেনও সময় মতো ঢাকায় পৌঁছাতে পারছে না। তাই ঢাকা ছাড়তেও এসব ট্রেনের দেরি হচ্ছে।
অপরদিকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে যানবাহনের চাপ রয়েছে। সকাল থেকেই যাত্রীরা লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে পারাপার হচ্ছেন। তবে নাব্যতা সংকটে এই রুটে ফেরি চলাচল কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। কিছুটা স্বস্তিদায়ক অবস্থা রয়েছে আরিচা ফেরি ঘাটে।
এদিকে ভোর থেকে যাত্রীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। মানুষের ভিড়ে মুখরিত ঘাট, প্লাটফর্ম, লঞ্চের ডেক আর করিডোর। নাড়ির টানে ছুটে চলছেন যে যার গন্তব্যে। বাস বা ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যেই যেতে হচ্ছে গন্তব্যে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে টার্মিনাল ঘুরে এমন দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। যাত্রীরা ভোর থেকে ঘাটে এসে পৌঁছতে থাকেন।
অপরদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশে প্রায় ১৫ কি.মি. যানজট দেখা দিয়েছে। গতকাল রবিবার রাত আড়াইটা থেকে ৩টায় বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় দুটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। কিন্তু এতে করে মহাসড়কের দুর্ঘটনার গাড়িগুলো নিতে একটু দেরি হওয়ায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়।
সোমবার ভোর থেকে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে পুংলী ব্রিজ পর্যন্ত এ যানজটের সৃষ্ট হয়েছে। এ কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন ঘরমুখো সাধারণ যাত্রী ও চালকরা। তবে মহাসড়কে যানজট নিরসনে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। গতকাল পর্যন্ত ঈদযাত্রায় স্বস্তিতে যাতায়ত করেছেন উত্তরবঙ্গসহ সংলগ্ন ২৩টি জেলার মানুষ।
দেশের এই তিন রুটের মধ্যে এবার রেল পথেই ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি। প্রচণ্ড গরমে রেল স্টেশনে ঘরমুখো যাত্রীরা অবর্ণনীয় কষ্ট করছেন। পাশাপাশি শিডিউল বিপর্যয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় না অনেক যাত্রীর।