২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৩১

ঢাকায় পৌঁছাল দেশের প্রথম ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’

নিজস্ব সংবাদদাতা:
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওয়াটার ক্যানন স্যালুটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হল দেশের প্রথম ড্রিমলাইনার আকাশবীণাকে।

রোববার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ১৯ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে এই আকাশযান।

রানওয়ে স্পর্শ করার পর ড্রিমলাইনারকে দুটি গাড়ি থেকে রঙিন পানি ছিটিয়ে ওয়াটার ক্যানন স্যালুটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ, পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম, পরিচালক (গ্রাহক সেবা) আলী আহসান বাবু, পরিচালক (অর্থ) বিনীত সুধ, পরিচালক (পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর মোহাম্মদ মাহবুব জাহান খান (অব.), পরিচালক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ ক্যাপ্টেন কেএইচ সাজ্জাদুর রহিম (অব.), পরিচালক বিপণন ও বিক্রয় আশরাফুল আলম, মহা ব্যবস্থাপক (কান্টমার সার্ভিস) আতিক সোবহান, মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ, নুরুল ইসলাম হাওলাদারসহ বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

বিজি-২৮০১ ফ্লাইটটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল পেনফিল্ড থেকে একটানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় এসেছে। বোয়িংয়ের ক্যাপ্টেন রিচার্ড এম ডেনটন, ক্যাপ্টেন চার্লি ক্রিস্টেনসন, বিমানের ক্যাপ্টেন ফজল ও ফার্স্ট অফিসার আনিতা রহমান ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন।

এর আগে সিয়াটলে বোয়িং ফ্যাক্টরি থেকে ড্রিমলাইনার বিমানটি গ্রহণ করেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) ইনামুল বারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।

বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল ইনামুল বারী (অব.) জানিয়েছেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত সম্পূর্ণ নতুন বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পছন্দে এর নামকরণ হয়েছে ‘আকাশবীণা’।

‘আকাশবীণা’র মধ্য দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫টি।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ বলেছেন, ‘ড্রিমলাইনার আকাশবীণার মধ্য দিয়ে নতুন মাইলফলক যুক্ত হলো বিমানে। যাত্রীদের নিরাপদ ও আরামদায়ক সেবা দিতে বিমান সচেষ্ট। অন্য এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নতুন উড়োজাহাজ বিমানকে সহায়তা করবে। যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ ও বিমানের মুনাফা বৃদ্ধিতে ড্রিমলাইনার নতুন মাত্রা যোগ করবে।’

বিমানের পরিচালক আলী আহসান বাবু জানান, ড্রিমলাইনার দিয়ে প্রাথমিকভাবে ঢাকা-সিঙ্গাপুর ও ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর হবে বিমানটির প্রথম বাণিজ্যিক যাত্রা। ট্যাক্স ও চার্জ বাদে ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ঢাকা রুটে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া ২০০ মার্কিন ডলার এবং ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া পড়বে ২৯০ মার্কিন ডলার।

আকাশবীণায় আসন সংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসের আসনগুলো বানিয়েছে অ্যাসটেলা। আর ইকোনমি ক্লাসের আসনগুলো হেইকোর বানানো। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরমদায়কভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন। দু’পাশের প্রত্যেক আসনের পাশে রয়েছে বড় আকারের জানালা।

একইসঙ্গে জানালার বোতাম টিপে আলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। জানালা থেকে শুরু করে কেবিনেও রয়েছে মুড লাইট সিস্টেম। ফলে যাত্রীরা সহজেই পরিবর্তন করতে পারবেন লাইটিং মুড। দীর্ঘ সময় ভ্রমণেও যাত্রীরা যেন ক্লান্তি অনুভব না করেন সেজন্য এর ভেতরে এয়ার কম্প্রেসার সিস্টেম অন্যান্য বিমানের তুলনায় উন্নত।

ড্রিমলাইনার ফ্লাইট উড্ডয়নের পরে বিজনেস ক্লাসে কোনও আসন ফাঁকা থাকলে ইকোনমি ক্লাসের যাত্রীরা সেটিতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে এজন্য উড়ন্ত অবস্থায় একটি নিলামে অংশ নিতে হবে তাদের। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা টাকা পরিশোধ করে ইকোনমি ক্লাস থেকে বিজনেস ক্লাসের আসনে স্থানান্তরের সুবিধা পেয়ে যাবেন।

ড্রিমলাইনারে ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট (আইএফই) সেবার জন্য প্যানাসনিক এভিওনিকস কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিমান। প্রতিটি আসনের সামনে প্যানাসনিকের এলইডি এস-মনিটর রয়েছে। মনিটিরে বিবিসি, সিএনএনসহ ৯টি টিভি চ্যানেল দেখা যাবে।

একইসঙ্গে ড্রীমলাইনারের ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমে (আইএফই) থাকবে ১০০টির বেশি ক্ল্যাসিক থেকে ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র।

এছাড়া রয়েছে বিমানের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত ভিডিও গেমস।

প্রকাশ :আগস্ট ১৯, ২০১৮ ১০:৪০ অপরাহ্ণ