ধর্ম ডেস্ক:
তাঁবুর শহর মিনায় হাজীদের সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে তাঁবুর শহর মিনায়।
শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত স্থল, নৌ ও আকাশপথে সৌদি আরবসহ বিশ্বের ১২২ দেশ থেকে ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৮২৬ হজযাত্রী চলতি বছর হজে অংশগ্রহণ করেছেন বলে সৌদি আরবের পরিসংখ্যান সংস্থার হিসাব অনুযায়ী জানা গেছে।
হাজীরা এ দিন বিকাল থেকে মিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। হাজীদের আরামের জন্য মিনায় তাঁবুতে ২১ হাজার এয়ারকন্ডিশন, ১০ হাজার স্প্রে ওয়াটার মিস্ট ফ্যান (কুয়াশা পাখা) স্হাপন করা হয়েছে। হাজীদের পরিবহনে ১৩ হাজার ৬৫০ ভেহিকল, প্রযুক্তিগত সহায়তা দানে ৪২ গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
আগামী সোমবার সূর্যোদয়ের পর তারা মিনা থেকে রওনা হবেন আরাফাত ময়দানের উদ্দেশ্যে। এ দিন দুপুর ১২টার পর মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা পাঠ করবেন মদিনা মসজিদে নব্বীর ইমাম ও খতিব ড. হোসাইন বিন আব্দুল আজিজ আল শাইখ।
ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আরাফাত ময়দানে অবস্থানের পর হাজীরা রওনা দেবেন ১৩ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে। সেখানে খোলা আকাশের নিচে অবস্থানের পাশাপাশি প্রতীকী শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য কঙ্কর সংগ্রহ করবেন। এ বছর হাজীদের কষ্ট লাঘবে কর্মী বাহিনী দিয়ে পাথর সংগ্রহ করে হাজীদের সরবরাহ করবে সৌদি সরকার।
হজের অংশ হিসেবে হাজীরা মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা ও মক্কায় পাঁচ দিন অবস্থান করবেন।
হজকে সুন্দর ও সুষ্ঠু করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সৌদি সরকার। হাজীদের ১৩৬ প্রকার সেবাদান করছেন সৌদি সরকারের ১৯টি সংস্থার তিন হাজার ১৪১ নারীসহ এক লাখ ৯২ হাজার ২৫৪ সদস্য। এ ছাড়া অগণিত রোবার স্কাউট ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তাদের সহযোগিতা করছেন।
এ বছর সৌদি সরকারের আমন্ত্রণে হজের সংবাদ সংগ্রহের জন্য বিশ্বের ১৫১ মিডিয়া ২৭ আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের ৮০০ সংবাদকর্মী সৌদিতে কাজ করছেন। এ ছাড়া ৬টি চ্যানেল ১০ ভাষায় অফিসিয়াল ব্রডকাস্টিং করবে হজ বুলেটিন।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ মিশনের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর শুক্রবার শেষ ফ্লাইটসহ ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৭ হজযাত্রী (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বিমান বাংলাদশে এয়ারলাইনস হজযাত্রী পরিবহন শেষ করেছে ১৫ আগস্ট। সৌদি এয়ারলাইনস হজযাত্রী পরিবহন শেষ করেছে ১৭ আগস্ট। প্রতারিতদের চোখের জলে শেষ হয়েছে হজ ফ্লাইট।
বাংলাদেশের সরকারি হিসাবে ভিসা হয়নি ৬০৬ জনের আর ভিসা পেলেও এজেন্সির গাফিলতির কারণে টিকিট হয়নি ৬৮ জনের। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে হজবঞ্চিত হলেন ৬৭৪ জন।
এদিকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার পূর্বে শনিবার পর্যন্ত বার্ধক্য, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ৫১ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ৪২ পুরুষ ও ৯ নারী রয়েছে।