ডেস্ক রিপোর্ট:
নাব্য সংকটে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া ফেরি রুটে দেড় সপ্তাহ ধরে বাস-ট্রাক পারাপার প্রায় বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাবে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের তীব্র জট সৃষ্টি হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও চাঁদপুর-হরিনা ফেরিঘাটেও।
এতে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৬ জেলাসহ পদ্মার দক্ষিণপাড়ে থাকা ২৩ জেলার মানুষের যাতায়াত ও আসন্ন ঈদে এ অঞ্চলের মানুষের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা বলছেন, লৌহজং পয়েন্টে ড্রেজিং চলছে। আজ রোববারের মধ্যেই পুরোপুরি চালু হবে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী চ্যানেল।
তখন স্বাভাবিক হয়ে যাবে তিন পয়েন্টের ফেরি পারাপার। তবে এককথায় আস্থা রাখতে পারছেন না বিআইডব্লিউটিএর কর্মচারীরাই।
তারা বলছেন, ড্রেজিংয়ের যে গতি, ঈদের আগে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হওয়া কঠিন।
এ মাসের শুরুতেই সংকট সৃষ্টি হয় কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া রুটে। পদ্মায় লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে দেখা দেয় নাব্য সংকট।
যেখানে রো রো ও ডাম্ব ফেরি চলাচলের জন্য অন্তত ৭-৮ ফুট পানি দরকার, সেখানে এ পয়েন্টে গভীরতা কমে দাঁড়ায় ৫-৬ ফুটে।
শিমুলিয়াঘাটে বিআইডব্লিউটিসি টার্মিনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট (টিএ) রফিকুল ইসলাম জানান, ‘১১-১২ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে রো রো ও ডাম্ব ফেরিতে যানবাহন পারাপার।
বর্তমানে কে-টাইপ ও মিডিয়াম ফেরিতে ছোট ছোট গাড়ি পার করা হচ্ছে। তাও খুব সাবধানে পার হতে হচ্ছে চ্যানেল।’ আরেক টিএ শাহিন হোসেন বলেন, ‘মিডিয়াম ও কে-টাইপ ফেরির স্বাভাবিক চলাচলে কমপক্ষে ৬ ফুট গভীরতা দরকার হয়। আমরা এসব ফেরিতে ভারী কোনো গাড়ি দিচ্ছি না।’
কাঁঠালবাড়ীঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন বলেন, ‘এত কিছুর পরও প্রায়ই লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে আটকে যাচ্ছে মিডিয়াম ও কে-টাইপ ফেরি। চরে আটকেপড়া এসব ফেরি টেনে নামাতে সেখানে রাখা হয়েছে টাগবোট। তা ছাড়া চ্যানেলটি এতই সরু যে সেখানে একটি ফেরি আটকা পড়লেই বন্ধ হয়ে যায় পুরো রুট।’
বর্তমানে এ রুটে ছোট ছোট ৮টি ফেরি চলছে জানিয়ে শিমুলিয়া পয়েন্টের টিএ মিরাজ হোসেন বলেন, ‘বহরে থাকা ২১টি ফেরির ১৩টিই বর্তমানে বন্ধ। এতে রাজস্ব আয়ও অনেক কমে গেছে।’
সহকারী মহাব্যবস্থাপক খালিদ নেওয়াজ বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে আমরা এ পয়েন্ট থেকে দিনে গড়ে ২৪০০-২৫০০ গাড়ি পারাপার করি। যার মধ্যে ১৪০০-১৫০০ ছোট গাড়ি, ৩০০-এর মতো বাস এবং প্রায় সাড়ে ৭০০ ট্রাক।
ডাম্ব ও রো রো ফেরি বন্ধ থাকায় এখন মাত্র দেড় থেকে ২০০-এর মতো ছোট গাড়ি পারাপার হচ্ছে। আগে এ পয়েন্টে দৈনিক ৩৫-৩৬ লাখ টাকা আয় হতো, এখন ৪-৫ লাখ টাকায় নেমে এসেছে।’
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক ৪ হাজারের মতো যানবাহন পারাপার হতো। সেখানে এখন দিন-রাত মিলিয়ে ৬-৭ হাজার যান পার করেও পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
চাঁদপুর-হরিণাঘাটেও বেড়ে গেছে যানবাহনের চাপ। ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী সাকুরা পরিবহনের এক চালক জানান, ‘সবচেয়ে বেশি জটিলতায় পড়েছে নিয়মিত কাঁঠালবাড়ী হয়ে চলাচলকারী প্রায় ৩০০-৪০০’ বাস।
এগুলোকে এখন প্রায় ১২৫ কিলোমিটার বেশি পথ পাড়ি দিয়ে পাটুরিয়া হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।