২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ২:৩১

মাংস থেকে চর্বি বাদ দেয়ার কৌশল

স্বাস্থ্য ডেস্ক:
কয়েক দিন পরই কোরবানির ঈদ। আর কোরবানি মানেই হলো রেড মিট বা লাল মাংসের সম্ভার এবং এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মুখোমুখি হওয়া। গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ, উট ও দুম্বার মাংসকে বলে রেড মিট বা লাল মাংস। আর এ গোশতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খারাপ কোলেস্টেরল, যা হৃৎপিণ্ডের প্রধান শত্রু। লাল মাংসে বিদ্যমান খারাপ চর্বি বা কোলেস্টেরল গ্রহণের ফলে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালী বা ধমনীর অভ্যন্তরে চর্বি জমে, ফলে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয় এবং পরিণামে ঘটে হার্ট অ্যাটাক। তাই কোরবানির মাংস গ্রহণে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।

কোরবানির মাংস থেকে চর্বি বাদ দেয়ার কৌশল :

* পশু কোরবানির পর মাংস কাটার সময় গোশতের গায়ে লেগে থাকা চর্বি যতটা সম্ভব কেটে বাদ দেবেন।

* মাংস রান্নার আগে মাংসকে আগুনে ঝলসে নিলে কিছু চর্বি গলে পড়ে যায়। এভাবে মাংসকে চর্বিমুক্ত করা যেতে পারে।
* মাংসকে একটু হলুদ-লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে রেফ্রিজারেটরে ঠাণ্ডা করলে কিছুটা চর্বি মাংস থেকে বেরিয়ে এসে জমাকৃত অবস্থায় থাকে। এ অবস্থায় বাড়তি চর্বিটুকু একটা চামচ দিয়ে আঁচড়ে সহজে বাদ দেয়া যায়।
* এ ছাড়া মাংসকে একটি র‌্যাক বা ঝাঁজরা পাত্রে রেখে অন্য একটি পাত্রের ওপর বসিয়ে চুলায় দিলে নিচের পাত্রে মাংসের ঝরে যাওয়া চর্বি জমা হবে। এ পদ্ধতিতে মাংস থেকে অনেক চর্বি বাদ দেয়া যায়।

অনেকে ঈদে মুরগির মাংস খেয়ে থাকে। তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তা হলো মুরগির মাংস খাওয়ার সময় অবশ্যই মুরগির চামড়া বাদ দিয়ে খেতে হবে, কারণ একটা মুরগিতে যে পরিমাণ চর্বি থাকে তার অর্ধেকটাই আসে চামড়া থেকে। মনে রাখতে হবে, একই সাথে মগজ ও কলিজা বাদ দিয়ে খেতে হবে।

কোলেস্টেরল ভাবনা : কোরবানির মাংস খাওয়ার সময় অবশ্যই কোলেস্টেরলের কথা মনে রাখতে হবে, কারণ মন্দ কোলেস্টেরল নীরবে মৃত্যু ডেকে আনে। যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি কিংবা বিপদসীমার কাছাকাছি, তারা চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে মাংস খাবেন। যাদের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে কিংবা ৩০ বছর বয়সের পর যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ২০০-এর বেশি, তাদেরকে রেড মিট বা লাল মাংস একেবারেই না খাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে কোরবানিতে যেহেতু মাংস খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে, সুতরাং একটু বুঝেশুনে খেতে হবে। যারা হৃদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বেশি তারা পশুর কলিজা, হৃৎপিণ্ড ও মগজ খেতে পারবেন না। একইভাবে ডিমের তৈরি যেকোনো খাবার তৈরির সময় কুসুম বাদ দিতে হবে। এসব রোগীর জন্য পোলাও-বিরিয়ানির পরিবর্তে খিচুড়ি বেছে নেয়া উত্তম। কোরবানিতে কোলেস্টেরল এড়িয়ে চলার আরো কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পন্থা হলো—
* রান্নার কাজে ঘি বা বাটার অয়েল ব্যবহার না করে তার পরিবর্তে সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করা।
* ফিরনি, পায়েস, মিষ্টান্ন প্রভৃতি তৈরির জন্য স্কিমড মিল্ক বা ননীতোলা দুধ ব্যবহার করা।
* দুধজাত খাবার কম রেখে খাদ্য তালিকায় প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল রাখা।

প্রকাশ :আগস্ট ১৮, ২০১৮ ২:২৪ অপরাহ্ণ