নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের জনগণকে ‘জেগে ওঠার’ আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘শুধু নিরাপদ সড়ক নয়, নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য সবাই এগিয়ে আসুন। সবাই জেগে উঠুন, দেশকে আবার স্বাধীন করুন।’
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে শুক্রবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ আয়োজিত সাংবাদিক নির্যাতনবিরোধী সংহতি সমাবেশে তিনি এই আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশকে, দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। আসুন দল মত নির্বিশেষে এক হয়ে সবার বুকের ওপর ভর করে বসে থাকা এই সরকারকে সরিয়ে দিই।’
তিনি বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে মেয়েদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের অপরাধ তারা নাকি ছেলেদের আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। যেদেশে প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের মুখে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়, সেদেশে আপনি কী আশা করছেন? একটা মেয়ে জামিন আবেদন করেছে, সেটা আদালত নাকচ করেছে। সে খুনি কিংবা ডাকাত নয়। সে চোরাচালানি কিংবা ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যায়নি। আজকে তার জামিন আবেদন নাকচ করে দিচ্ছেন। আর যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে, শেয়ারবাজার লুট করেছে তাদের প্রতিবেদন পর্যন্ত প্রকাশ করেন না। কারণ তারা সবাই আপনাদের লোক।’
১৫ আগস্টের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জড়িত— প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় বিএনপি ও জিয়া পরিবারের ভূত দেখতে পান। তিনি যা খুশি তাই বলেন। কিন্তু আপনার মুখ থেকে এ ধরনের কথাবার্তা কখনো শোভা পায় না। দয়া করে এ ধরনের কথাবার্তা বন্ধ করুন।’
এক-এগারোর পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরপরও আপনারা সরকারে আছেন? এখনও পদত্যাগ করছেন না! সরকার আপনাদের। আর আপনারা এক-এগারোর পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন!’
সমাবেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর খুবই ভক্ত। তার প্রতিটি বক্তব্য মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করেন, বোঝার চেষ্টা করেন— তিনি কীভাবে সারাবছর দেশবাসীকে ‘বোকা বানিয়ে’ শাসন করছেন।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘অন্ধকার ঘরের মধ্যে শুধু সাপের সন্দেহ। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অপরাধে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। স্কুল-কলেজের ছাত্রদের গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হচ্ছে। অথচ সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের ছবি, ভিডিও থাকার পরও দোষীদের ধরা হচ্ছে না। ১৪ বছরের শিশু নিরাপদ সড়কে দাবিতে আন্দোলন করেছে— তাকেও গ্রেফতার করছে। যেহেতু এটা নির্বাচনের বছর। আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। তাই সাংবাদিক, শিশু, বোন ও মা চিনি না। এটাই হচ্ছে সরকার।’
বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে সংগঠনের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, আব্দুস শহিদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।