নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এর সুফল পাচ্ছে না। ফলে সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অধিকাংশ স্কুলে প্রজেক্টরগুলো বাক্সবন্দী হয়ে পড়ে রয়েছে। ল্যাপটপগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে বিদ্যালয় বা শিক্ষকদের ব্যক্তিগত কাজে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্টর ব্যবহার হয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার কাজে। কে বা কারা এ বিষয়ের শিক্ষক তাও জানে না অনেক শিক্ষার্থী। তবে অধিকাংশ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্লাস নিয়মিত না হলেও অনিয়মিতভাবে নেওয়া হয় বলে দাবি করা হয়েছে।
মাল্টিমিডিয়া ক্লাস না হওয়ার পেছনে অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, শ্রেণিকক্ষের অনুপযোগিতা, শিক্ষকদের অনাগ্রহ, রিফ্রেশমেন্ট প্রশিক্ষণ না দেওয়া এবং কনটেইন তৈরিতে শিক্ষকদের সময় না দেওয়াকেই মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে- নিয়মিত ক্লাস নিশ্চিত করার বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে না। এমন অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। নিয়মিত ক্লাস হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে জোর দাবি জানিয়েছেন তারা। হতাশা ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও। ইত্তেফাকের অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তি আক্তারের কাছে জানতে চাইলে সে ওই বিদ্যালয়ে নিয়মিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাস হয় না বলে জানায়।
ওই বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক বলেন, শ্রেণিকক্ষ না থাকায় নিয়মিত ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
নাসির আহমেদ নামের এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিয়মিত করার জোর দাবি জানান।
উপজেলার হাতিবান্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক আফরোজা আক্তার বলেন, ভালোভাবে ক্লাস নিতে মাত্র বারো দিনের প্রশিক্ষণ যথেষ্ট নয়। রিফ্রেশমেন্ট প্রশিক্ষণও প্রয়োজন। তবে তিনি বলেন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস সময়োপযোগী। শিক্ষার্থীরা এ ক্লাসের প্রতি দারুণ আগ্রহী আছে। অভিযোগ রয়েছে কনটেইন তৈরি করতে অনেক সময় লাগে তাই শিক্ষকরা এ কাজে আগ্রহী নয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, প্রথম থেকেই এ বিষয়ে শিক্ষকদের তাগিদ দেওয়া হলেও নানা জটিলতায় নিয়মিত ক্লাস নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দ্রুত নিয়মিত ক্লাসের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের অনাগ্রহ, শ্রেণিকক্ষের অনুপযোগিতা, কার্যকর প্রশিক্ষণের অপ্রতুলতা, রিফ্রেশমেন্ট প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিয়মিত নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নিয়মিত ক্লাস পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তাগিদ দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমী সরকার রাখী বলেন, বর্তমান সময়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ক্লাস নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।