নিজস্ব প্রতিবেদক:
শিশু-কিশোরদের জেগে ওঠাতে সরকার ভয় পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, নিরপরাধ শিশু-কিশোরদের দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে সরকারের র্যাব-পুলিশ। রাষ্ট্র, গণতন্ত্র, সামাজিক অগ্রগতি ও সভ্যতার শত্রু বর্তমান একদলীয় আওয়ামী সরকার। এরা মানসিক বৈকল্যগ্রস্ত, ক্ষমতায় থাকার জন্য শিশু-কিশোরদের রক্ত ঝরাতেও দ্বিধা করেনি। শিশু-কিশোরদের জেগে ওঠাতে ভয় পেয়েছে সরকার। তিনি বলেন, শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন প্রচলিত আন্দোলন নয়, এটি ভিন্ন ধারার প্রতিবাদের এক অনন্য স্বতন্ত্র রূপ।
বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে বারটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশে নানা অশুভ খেলা চলছে-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘দেশে অশুভ সরকার থাকলে জনগণ অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে যে খেলায় অবতীর্ণ হয় তা প্রকাশ্য ও ন্যায়সঙ্গত। অশুভ সরকার ক্ষমতায় থাকলে তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান সমালোচনা, প্রতিবাদ, মিছিল ও সমাবেশ হচ্ছে জনগণের পক্ষের শক্তির শুভ খেলা। এখানে কোনো অদৃশ্য খেলা নেই।‘
কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন ন্যায্য ও বিবেক জাগানিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা গোপন কিছু করেনি, তাদের আন্দোলন প্রকাশ্য ও জনসমর্থিত। কিন্তু তাদের আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও কাদের সাহেবরা প্রথম কয়েক দিন করুণামাখা কথা বলছেন। সরকারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রায় সবাই বলেছেন, কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি ন্যায়সঙ্গত। তাহলে এখন তাদের ওপর এই সহিংসতা কেন? আসলে আন্দোলনের প্রথম দিকে পড়ুয়াদের আন্দোলন নিয়ে সরকারের সহানুভূতি ছিল ছলনামাত্র।’
রিজভী অভিযোগ করেন, সহানুভূতির অন্তরালে ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে আন্দোলন দমানোর জন্য প্রস্তুতি চলছিল। এর প্রমাণ দুইদিন পরেই দেখা গেল। অশুভ সরকারের হেলমেট পরিহিত আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে কচি শিশু-কিশোরদের ওপর।
তিনি বলেন, ‘শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের রক্ত দেখে আনন্দিত হলো সরকার। সোনার ছেলেদের কীর্তি স্বর্ণাক্ষরে লেখার হয়তো এখন প্রস্তুতি নেবে ক্ষমতাসীনরা। সেজন্যই আমরা দেখলাম, ছাত্রলীগের আক্রমণকারীদের দেখতে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আক্রান্ত শিশু-কিশোর ও সাংবাদিকদের দেখতে যাননি তিনি।’
সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বর্তমান সরকারের জন্য এই দেশ ভয়ানক আতঙ্কের দেশে পরিণত হয়েছে। কারণ তাদের দেহের মধ্যে মনুষত্বের আত্মা নেই, বিবেক নেই। তাদের মধ্যে দানবের আত্মা। শয়তানের আত্মা।’
রিজভী মনে করেন, সরকার এখন প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছে। এই জাগরণ বন্ধ করা যাবে না। শিশুদের জাগরণের ঢেউ লেগেছে শহর থেকে গ্রামে আনাচে কানাচে। এই জাগরণ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। যতোই যড়যন্ত্র ও তৎপরতার কথা বলুক না কেন আওয়ামী নেতাদের দুঃশাসনের বিদায়ের বাঁশি বাজতে শুরু করেছে। এ সময় তিনি শিশু-কিশোরদের হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিক শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।