২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:৫৮

প্রায় ছয় হাজার হজযাত্রীর হজে যাওয়া অনিশ্চিত

ধর্ম ডেস্ক:
পবিত্র হজের দিন যত ঘনিয়ে আসছে কয়েক হাজার হজযাত্রীর সৌদি আরব পৌঁছানো নিয়ে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ততো বাড়ছে। অব্যাহত ফ্লাইট বিপর্যয়ের কারণে এই আশংকা দেখা দিয়েছে। শেষ সময়ে বহু হজযাত্রীর ভিসা-টিকিট হাতে থাকার পরও উড়োজাহাজে উঠতে পারবেন কি-না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

অসাধু এজেন্টদের প্রতারণার কারণে হজযাত্রী সঙ্কটে প্রতিদিনই বাতিল হচ্ছে হজ ফ্লাইট। গত ১০ দিনে ১৫ টি ফ্লাইট আকাশে ওড়েনি। ফলে দেখা দিয়েছে বিমানের ভয়াবহ ফ্লাইট বিপর্যয়। এসব ফ্লাইটে মোট ৬ হাজার ১০০ হজযাত্রীর সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল। এদিকে, সৌদি অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এ বছর বাংলাদেশ বিমানকে নতুন আর স্লট (বিমান ওঠা-নামার অনুমতি) দেবে না।

এদিকে আজ মঙ্গলবার হজযাত্রীদের ভিসার আবেদন করার শেষ সময়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রায় চার হাজারের মতো হজযাত্রীর ভিসার জন্য ডিও গ্রহণ করেনি ৬৮টি এজেন্সি। এ জন্য এসব এজেন্সিকে গতকাল সোমবার আশকোনা হজ অফিসে শুনানির জন্য ডাকে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তাতে সাড়া দেয়নি সবাই। চাঁদ দেখা সাপেক্ষ আগামী ২০ আগস্ট হজ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বিমানের হজ ফ্লাইট চলবে আর ৮ দিন। ১৫ আগস্ট বিমানের শেষ ফ্লাইট সৌদি আরব যাওয়ার কথা। ফ্লাইট বিপর্যয় ঠেকাতে বেসরকারি এজেন্সি মালিকদের ১৫ শতাংশ রিপ্লেসমেন্টের দাবি মেনে নিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। তারপরও এজেন্টরা সরকারকে সহযোগিতা করছে না বলে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান।

বিমান বাংলাদেশের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ জানান, এখনো বিমানের পাঁচ হাজারের বেশি টিকিট অবিক্রীত রয়ে গেছে। এ বছর ভিসা পাওয়ার আগেই বিমানের টিকিট নিশ্চিত করার বিধান হওয়ায় আমরা হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার ৫০ দিন আগে থেকে টিকিট বিক্রি শুরু করি। এরপর বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের বারবার টিকিট কিনতে তাগাদা দিয়ে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা এখনো সব টিকিট কাটেনি। এ কারণে ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি।

শাকিল মেরাজ আরো বলেন, সৌদি অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর তারা আর নতুন কোনো স্লট দেবে না। এ কারণে বহু হজযাত্রীর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। এতে বিমানের ক্যাপাসিটি লস হয়েছে পাঁচ হাজার ২০০ জন যাত্রীর। শাকিল মেরাজ জানান, পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় গত সোমবার একটি হজ ফ্লাইট বিজি ৩০৭১ ডিপার্চার বাতিল করা হয়েছে। এটি সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের বিজি ১০৭৫ ফ্লাইটটিও বাতিল করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত: গত বছর ভিসা জটিলতায় যাত্রী না পেয়ে ২৪টি হজ ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল বিমান। তবে সৌদি সরকার নতুন করে স্লট দেওয়ায় ভোগান্তি কমে যায়। এই ফ্লাইট বিপর্যয়ে গত বছর ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয় রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহন সংস্থা। সেই ঘাটতি পূরণের জন্য এবছর হজযাত্রীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বিমান। হজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ— হাবের মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। তবে সরকারি কোটার মতো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়ও কিছু হজযাত্রী হজে নাও যেতে পারেন।

প্রকাশ :আগস্ট ৭, ২০১৮ ১২:১১ অপরাহ্ণ