স্বাস্থ্য ডেস্ক:
স্বাস্থ্য নিয়ে যারা সচেতন, তারা দুটি ‘সাদা বিষ’ এড়িয়ে চলেন। এগুলো হল চিনি ও লবণ। চিনির বিষয়টা অনেকেরই ভালো করে জানা। অনেকে ভাবছেন লবণ আবার বিষ হলো কীভাবে? আসলে কাঁচা লবণ শরীরের জন্য বিষই। অতিরিক্ত লবণ ক্ষতিকর। কিন্তু এই দুটি বস্তু ছাড়াও নিজের অজান্তেই আরো একটি মারাত্মক সাদা বিষ প্রতিনিয়ত গ্রহণ করে চলেছি আমরা। তার নাম সোডিয়াম গ্লুটামেট বা মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। এটি প্রক্রিয়াজাত খাবারের অন্যতম উপাদান। রেস্তরাঁ’র খাবারে এর ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেরই কোনও ধারণা নেই। তবে প্রাকৃতিকভাবেই কিছু খাবারে সোডিয়াম গ্লুটামেট থাকে। সাধারণত এটি সাদা রঙের ক্রিস্টালাইন পাউডার আকারে থাকে। দেখতে অনেকটা চিনি বা লবণের মতোই। স্বাদ-গন্ধ বাড়ানোর একটি উপাদান এটি। স্বাদ বাড়াতে অনেকে এটি খাবারে ঢেলে দেন। কিন্তু ঘটনা অন্য খানে ঘটতে থাকে।
মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সক্ষম এটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিমাণ যদি নগণ্য হয় তবে নিরাপদ হতে পারে এটি। কিন্তু সামান্যতেই দারুণ ক্ষতি ঘটে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জি আছে এবং এই উপাদানটিতে সংবেদনশীল, তাদের বিপদের শেষ নেই। বেশি খেলে তো কথাই নেই। বেশিরভাগ প্রক্রিয়াজাত খাবারে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট থাকে। চিপস, প্যাকেটজাত স্যুপ, ক্যানের খাবারে এটা প্রচুর দেয়া হয়। এসব খাবার অস্বাস্থ্যকর হওয়ার কারণই হলো এই বস্তুটির উপস্থিতি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক খাবার ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে মেলা এই উপাদানটি একই। তবে প্রক্রিয়াজাত খাবারে এটি থাকে বেশি পরিমাণে। তাই সেগুলি খুব ক্ষতিকর। ক্যানে থাকে এমন সসেজ, চিপস, স্যুপ, হট ডগস, বিয়ার এবং আরো এ ধরনের অনেক খাবারে এটি থাকে। আর প্রকৃতিগতভাবে পনির, টোম্যাটো সস, ওয়ালনাট, ডাল, গম ইত্যাদিতেও থাকে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। এ কারণে ওই সব খাবার আরও বেশি খেতে মন চায়। অতিরিক্ত খাওয়ার নেশা চাপে। স্থূলতা এবং বিপাকক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দেয়।
খাওয়ার পর মাদক যেমন মস্তিষ্কের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে, একই আচরণ করে এই উপাদানটি। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারে সোডিয়াম গ্লুটামেট থাকার কারণে ডায়াবেটিসও দানা বাঁধে। অ্যাড্রিনাল স্ট্রোকের ঝুঁকি বয়ে আনে এই উপাদান। কাজেই এখন থেকে তৃতীয় এই সাদা বিষ থেকে সাবধান হতে শুরু করুন।