২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:০৬

‘ভবিষ্যতেও ইন্টারনেট-ফেসবুক বন্ধ করা হতে পারে’

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:
রাষ্ট্রকে বিপন্ন করার মতো পরিস্থিতির উদ্ভব হলে ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

সোমবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মন্ত্রী।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে শনিবার (৪ আগস্ট) ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে ঢাকায় তাণ্ডব চালানো হয়। এরপর সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টা থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার।

আগামীতে জাতীয় নির্বাচন বা অন্য বিষয়কে সামনে রেখে ইন্টারনেট স্লো ডাউন করা হবে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

‘আমি একটি বিষয় নিশ্চিত করতে পারি- সবার আগে রাষ্ট্র, জনগণের নিরাপত্তা ও অন্য বিষয়গুলো। এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আমার যদি এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, যে পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে কিংবা জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, তখন প্রযুক্তির দিকে তাকিয়ে থাকা কোনো অবস্থাতেই নয়। আমাকে বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্রতম সেকরিফাইজ করতেই হবে। এটি সঙ্গত কারণেই করতে হবে।’

পরিস্থিতি অনুযায়ী ফেসবুকও বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, আজ আমি যদি দেখি, ফেসবুক আমার রাষ্ট্রকে বিপন্ন করে ফেলেছে, তাহলে আমার রাষ্ট্র বাঁচাবো না ফেসবুক বাঁচাবো, আমাকে অবশ্যই রাষ্ট্র বাঁচাতে হবে এবং তার জন্য যা করার তা আমাকে করতেই হবে।

গুজবগুলো ফিল্টারিংয়ে দেরি হচ্ছে কেন- প্রশ্নে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ফেসবুকে আমাদের ফিল্টারিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা কেবল ফেসবুককে অনুরোধ করতে পারি। ফেসবুক তার স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী কাজগুলো করে।

এতোদিন আমাদের ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না, এখন ফেসবুকের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ট যোগাযোগ আছে। ফেসবুক আমাদের সব কথা শোনে না, কিন্তু কিছু কথা শোনে।

‘তবে এই ব্যবস্থাটিকে আমরা মনে করি পর্যাপ্ত না। সে কারণে টেলিকম বিভাগের মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি শেষ করতে পারলে সম্পূর্ণভাবে কনটেন্ট ফিল্টারিং বা যাচাই-বাছাই করতে সক্ষম হবো। প্রকল্পটি টেবিলে ছিল, এখন এটি মাঠে আছে।’

এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, দুনিয়ায় প্রচলিত প্রযুক্তির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে মোবাইল ও মোবাইল ব্রডব্যান্ডের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন দেখছি এখানে দাঁড়িয়ে থেকে আমি বোধহয় কল্পনাও করতে পারবো না যে ৫-জি আমার জীবনধারা কেমন করে বদলাবে, আমার ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রীয় জীবন সমস্ত কিছুর ক্ষেত্রে কী প্রভাব বিস্তার করবে?

এই আলোচনার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো খুঁজে বের করবে, আমি একদিকে নিয়ন্ত্রণ করবো, আরেক দিক থেকে বাধা দেবো না। আমার বিকাশ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জায়গাটাও ধরে রাখতে হবে।

মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে ভূমিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কোনো অবস্থাতেই আমাদের অবস্থানটাকে আইনের বাইরে নেবো না। যার যা করার তাকে তা করতে হবে।

আমি যেমন করে রাজস্ব ফাঁকি দিতে দেবো না, যেমন করে জনগণের সঙ্গে কোনো ধরনের কূটবুদ্ধি চালাতে দেবো না, ঠিক তেমনি করে যেখানে যে আইন মেনে চলা দরকার সেই আইন সবাইকে মেনে চলতে হবে।

আমরা যেমন করে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা হিসেবে আমাদের নিয়ম-কানুন মেনে চলবো, তেমনি করে যাদের নিয়ন্ত্রণ করি তাদেরও আমাদের নিয়ন্ত্রণের বিধি-বিধান মেনে চলতে হবে।

আইনি পদক্ষেপ নিয়ে রাজস্ব আদায় করা হবে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, নিঃসন্দেহে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ রাখা হবে না। যখনই করা হোক না কেন আমরা আদায় করবোই।

টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক এবং আইটিই’র নেতারা এতে বক্তব্য রাখেন।

প্রকাশ :আগস্ট ৬, ২০১৮ ৫:৩২ অপরাহ্ণ