২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:২৮
সংগৃহীত ছবি

সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ অনুপস্থিত:  বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেখতে চায় ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদের ডাকা সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজেই ছিলেন অনুপস্থিত। তার স্থলে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। দলের বনানী কার্যালয়ে বেলা ১১টার পর সাংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে হাজির হয়ে রুহুল আমিন প্রথমেই সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেয়া হবে না বলে জানান। এরশাদের ভারত সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্যে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ যেন বজায় থাকে সেটা ভারত চায়। পাশাপাশি বাংলাদেশে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করে।

তিনি বলেন, ভারতীয় নেতৃবৃন্দ আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত বজায় রাখতে তাদের নৈতিক সমর্থন সব সময় থাকবে। রুহুল আমিন বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে আমরা পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি সফর করেছি। চেয়ারম্যানের সঙ্গী ছিলাম আমি, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সুনীল শুভ রায় ও মেজর (অব.) মোহাম্মদ খালেদ আক্তার। ২২জুলাই ১টায় নয়া দিল্লি পৌঁছাই। ২৫ জুলাই বিকেল ৪টায় ঢাকায় ফিরি। আপনারা জানেন আমাদের এ ভারত সফর নিয়ে দেশে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। অনেক জল্পনা ও কল্পনারও সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন এসেছে কেন আমরা হঠাৎ করে এ সফরে গেলাম। আমরা এসফর নিয়ে দেশেবাসী ও মিডিয়াকে ঘোরের মধ্যে রাখতে চাই না। এজন্যই আজকের এ সংবাদ সম্মেলন। গত ১৭ জুলাই বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জাপা চেয়ারম্যানের বাসভবনে গিয়ে তাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান। আমরার সেই আমন্ত্রণেই নয়া দিল্লি সফর করেছি। সফরে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাথে বৈঠন নির্ধারণ ছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নয়া দিল্লিতে উপস্থিত না থাকায় তার সাথে বৈঠক হয় নাই। ২২ শে জুলাই বিকেল ৪টায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং’র সাথে তার বাসভবনে বৈঠকে মিলিত হয়েছি। সেখানে আমরা পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। ২৩ শে জুলাই দুপুর দেড়টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাথে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়েছে। সন্ধ্য ৬টায় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা অজিত দোলাভালের সাথে তার বাসভবনে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তিনটি বৈঠকই অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্য পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই তিন শীর্ষ নেতার সাথে প্রায় অভিন্ন বিষয় নিয়েই আলোচনা হযেছে। ভারতীয় নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, তাদের সরকার ও জনগণ বাংলাদেশের সাথে বিরাজমান সুসম্পর্ক আরো সৃদৃঢ় দেখতে চায়। তারা একান্ত ভাবে প্রত্যাাশা করেছেন বাংলাদেশের গণাতান্ত্রিক পরিবেশ যেন বজাায় থাকে। তারা আরো বলেছেন, ভারত সবসময়ই বাংলাদেশে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্টু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করে। ভারতীয় নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের সাংবিধানিক ধারা রাখায় জাতীয় পার্টির ভুমিকার ভূয়শী প্রশংসা করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থেকেও সরকারের সাথে দায়িত পালন করছে। এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত।

রুহুল আমন হাওলাদার বলেন, আমরা জানিয়েছি যে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে জাতীয় পার্টির সব সময় সোচ্চার থাকবে। আমরা এখন আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা বলেছি অত্যন্ত বিরুপ পরিস্থিতির মধ্যেও জাতীয় পার্টি অংশ নিয়েছে। লেভেল প্লেয়িং আমরা পাইনি। তবুও নির্বাচন থেকে সরে যাইনি। আমাদের সাংগঠনিক অবসথা আগের চেয়ে অনেক সুসংগঠিত। তাই আশা করছি আমরা আগামিতে সরকার গঠন করতে পারবো। ভারতীয় নেতৃবৃন্দ দেশ পরিচালনায় আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতার প্রশংসা করেছেন। পাশপাশি আগামি নির্বাচনে আমাদের সাফল্য কামনা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমরা সংবাদ সম্মেলন থেকে আপনাদের একটি বিষয় জানাতে চাই, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে নির্বচন থেকে সরে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছি। একই সঙ্গে আমাদের সকল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাদেক আবদুল্লাহর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি।

প্রকাশ :জুলাই ২৬, ২০১৮ ৩:১২ অপরাহ্ণ