নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভাষ্য, খালেদা জিয়া এখনো ‘গুরুতর’ অসুস্থ। তিনি দর্শনার্থীদের সঙ্গে নিচে নেমে কথা বলেন। কিন্তু এখন তিনি খুব বেশি অসুস্থতার কারণে দোতলা থেকে নিচে নামতেই পারছেন না। এখনো তিনি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। তাঁর হাঁটাচলা করতে কষ্ট হয়।
আজ রোববার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, গতকাল শনিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরা কারাগারে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। রিজভী আরও বলেন, খালেদা জিয়ার ওপর সরকারপ্রধানের ‘প্রতিহিংসা’ এক অশুভ অপশাসনের বার্তা দেয়। দলের পক্ষ থেকে সরকারের নির্দয় আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান রিজভী।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন রিজভী। তিনি অভিযোগ করেন, তিন সিটিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাত-দিন গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীরা ‘জনসমর্থনহীন’। আর এসব প্রার্থীকে জেতাতে তৎপর হয়ে উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ধানের শীষের আবেদন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। খুলনা ও গাজীপুরের স্টাইল—গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে ক্রমাগত হত্যা করার স্টাইল। সেই স্টাইল ৩০ জুলাই তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এখনো বলবৎ রয়েছে। ক্ষমতাসীন দল বেআইনিভাবে জয়ী হতে চাইছে বলেই বেপরোয়া গ্রেপ্তার, গণগ্রেপ্তারসহ এক আতঙ্কজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে রিজভী আরও অভিযোগ করেন, রাজশাহীতে যাঁদের ধানের শীষের প্রার্থীর এজেন্ট মনোনীত করা হয়েছে, তাঁদের কারও নামেই মামলা নেই। অথচ গোয়েন্দা পুলিশ ধানের শীষের এজেন্টদের নির্বিচারে আটক করে ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা পর তাঁদের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় অভিযুক্ত করে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। পুলিশি এই ‘অনাচার’ এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সিলেট সিটি নির্বাচন বিষয়ে রিজভী অভিযোগ করে বলেন, সিলেটে বিএনপির দুজন নেতা-কর্মীকে পুলিশ রাতে উঠিয়ে নেওয়ার পর সকালে অস্বীকার করে। সিলেটে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক নির্বাচনী প্রচারণা বাদ রেখে নিজের নেতা-কর্মীদের বাঁচাতে এবং তাঁদের মুক্তির দাবিতে গতকালও পুলিশ কমিশনারের অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। বরিশালেও বিএনপিসহ ২০-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, তাঁদের বাড়িঘর ও নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, হয়রানিসহ গ্রেপ্তারের হিড়িক চলছে। পুলিশি অভিযানে সারা বরিশাল শহরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা তাঁদের নিশ্চিত পরাজয় জেনে তিন সিটি করপোরেশন এলাকাতেই পুলিশকে দিয়ে এক আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম এ মান্নান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।