১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং | ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১১:১১

ভারতের গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় যশোরের উদ্যোক্তারা

জেলা সংবাদদাতা:
কোরবানি সামনে রেখে এবারও ভারত থেকে গরু আমদানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন যশোরের খামার উদ্যোক্তারা। ভারত থেকে গরু ঢুকলে দেশি গরুর দাম পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। আর তাই হলে লোকসান দিয়ে তাদের পথে বসতে হবে।
উদ্যোক্তারা বলেছেন, যশোরের খামারে পালিত পশু এবারের কোরবানিতে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। ভারতীয় গরু আমদানি করা না হলেও কোরবানির ঈদে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। আর এ কারণে এবার কোরবানির জন্য ভারত থেকে গরু আমদানি না করার জোর দাবি উঠেছে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে।

যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, জেলায় নিবন্ধনকৃত খামারের সংখ্যা ৮০। তবে মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন সূত্র থেকে খোঁজ নিয়ে তথ্য পাওয়া গেছে, জেলার ৮ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৯ হাজার ছোটবড় খামার গড়ে উঠেছে। সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে এসব খামারে পালন করা হচ্ছে বিভিন্ন জাতের গরু ও ছাগল। গ্রামের বেকার যুবকদের পাশাপাশি অনেক নারীও নিজ বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলেছেন ছোট ছোট গরু ও ছাগলের খামার। অন্তত ৬ মাস আগে থেকে তারা নিবিড় পরিচর্যা শুরু করেছেন এসব গবাদি পশুর। আর কিছুদিন পরেই তা কোরবানির বাজারে তোলা হবে।

স্থানীয়রা জানান, গত চার বছর ধরে কোরবানি উপলক্ষে সীমান্ত এলাকা বেনাপোল দিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভারতীয় গরু না আসার সুযোগে যশোরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠে বেশ কিছু গরুর খামার। এসব খামারে পালন করা হচ্ছে নানা জাতের দেশি গরু। এসব গরু বিগত কয়েক বছর এ অঞ্চলের কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রেখে আসছে।

যশোর সদর উপজেলার রামনগরস্থ খামারবাড়ী ফার্মের উদ্যোক্তা শেখ ইমামুল কবির জানান, পশু খাবারের দাম আগের চেয়ে বেশ বেড়েছে। ৬০০ টাকার (৩৫ কেজির বস্তা) ভুসি ৯৫০ টাকা, ৩০০ টাকার কুঁড়ো (৪০ কেজির বস্তা) ৪০০ টাকা, ১৫ টাকা কেজির পালিশ ২০ টাকা, ২৫ টাকা কেজির খৈল ৩৫ টাকা, ঘাস ২০ টাকার স্থলে ৪০ টাকা আঁটি এবং ৪০০ টাকার এক কাউন বিচালি এখন ২৫০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ভারত থেকে গরু এলে তাদের লোকসান দিয়ে পথে বসতে হবে। এতে দেশি খামারের উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত ও বেকার হয়ে পড়বেন। ভারত থেকে যাতে গরু না আসে, সে জন্য প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানিয়েছে, যশোরে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ৩০ হাজার গরু ও ২৭ হাজার ছাগলের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে খামারগুলো থেকে প্রায় ৪০ হাজার গরু ও ৩০ হাজার ছাগল সরবরাহ করার সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে এ বছরও কোরবানির ঈদে পশুর কোনো সংকট হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, খামারের পশু যাতে দেশীয় নিরাপদ পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করা হয়, সে বিষয়ে উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

প্রকাশ :জুলাই ২২, ২০১৮ ২:১৪ অপরাহ্ণ