ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র ও ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের শনাক্ত করতে ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী সূর্যসেন হলে গেলে সেখানেও তাঁদের দ্বিতীয় দফায় পেটানো হয়। মারধরে ছাত্রীর পায়ের নখ উঠে গেছে।
এ ঘটনা তদন্তে সূর্যসেন হল প্রশাসন তিন সদস্যের কমিটি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ওই দুই শিক্ষার্থী বিকেলে মল চত্বরে হাত ধরে দাঁড়িয়ে রিকশা খুঁজছিলেন। এমন সময় সূর্যসেন হলের ১০ থেকে ১২ জন ছাত্রলীগ কর্মী তাঁদের ঘিরে ধরে পরিচয় জানতে চান। তাঁরা নিজেদের পরিচয়পত্র দেখান। ওই ছাত্র পরিচয় জানতে চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাঁকে মারধর শুরু করেন। ছাত্রীটি তাঁকে রক্ষা করতে গেলে তিনিও আহত হন।
মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, মারধরের পর হামলাকারীরা সূর্যসেন হলের ভেতরে চলে যান। তাঁরাও পেছন পেছন সেখানে গেলে দ্বিতীয় দফায় তিন-চারজন তাঁদের স্ট্যাম্প, লাঠিসোঁটা দিয়ে পেটান। পরে হলের অতিথিকক্ষে বসে থেকে তিনি প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষকে মুঠোফোনে অভিযোগ করেন। এ সময় প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী তাঁদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন বলে অভিযোগ তাঁর।
তবে প্রক্টর বলেন, এই ছাত্রী রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁকে ফোন দেন। তিনি ঘটনা শুনে ছাত্রীটিকে তাঁর নিজের হল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাতে বলেন। তিনি নিজেও বিষয়টি সূর্যসেন হল প্রাধ্যক্ষকে জানান। ওই শিক্ষার্থীদের সহায়তা করতে প্রক্টরিয়াল বডির গাড়ি পাঠান।
রাত পৌনে ১০টার দিকে হলের প্রাধ্যক্ষ এ এস এম মাকসুদ কামাল ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি ঘটনার বিবরণ শুনে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। তাঁদের হলে পৌঁছানো এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
আহত ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে আমাদের কেন মারা হলো—শুধু সেটুকু জানতে চাই। আমরা দুজনই তৃতীয় বর্ষের। বিনা কারণে প্রথম বর্ষের ছাত্ররা আমাদের মারল। আমাদের ক্যাম্পাসে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’
জানতে চাইলে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম সারোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের আপত্তিকর অবস্থায় পেয়ে হলের ছাত্ররা পরিচয় জানতে চান। ছাত্রটি জিয়া হল ছাত্রলীগের পরিচয় দেন। একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটি থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে মাকসুদ কামাল বলেন, হলের সিসি টিভির ফুটেজ দেখে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। ঘটনা তদন্তে হলের আবাসিক শিক্ষক মো. তারিক জিয়াউর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।