আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আসন্ন নির্বাচনের একজন প্রার্থীসহ অন্তত ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, এ ঘটনায় আহত দুই শতাধিক মানুষ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বেলুচিস্তানের মাসটাং জেলায় এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটার কাছেই মাসটাং।
বেলুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগা ওমর বাঙ্গুলজাই ডননিউজ টিভিকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জঙ্গি সংগঠনটি পরিচালিত ওয়েবসাইট আমাক নিউজ জানিয়েছে। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে বিস্ফোরণের পর সবচেয়ে মারাত্মক বিস্ফোরণের ঘটনা এটি।
ডন নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিহত প্রার্থীর নাম নওয়াবজাদা সিরাজ রাইসানি। তিনি সেখানকার প্রাদেশিক আসন পিবি-৩৫-এ বেলুচিস্তান আওয়ামি পার্টির (বিএপি) হয়ে লড়ছেন।
বাঙ্গুলজাই বলেন, কোয়েটার হাসপাতালে নেওয়ার আগেই নওয়াবজাদা সিরাজ রাইসানি মারা যান।
বেলুচিস্তানের সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক আসলাম তারিন ও দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ঘটনাকে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ বলে নিশ্চিত করেন।
প্রাদেশিক ওই কর্মকর্তা বলেন, হামলাকারীকে শনাক্ত করা যায়নি। হামলায় ৮ থেকে ১০ কেজি ওজনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা আসলাম তারিনের।
হামলাকারী রাজনৈতিক সভা চলার সময় সভাস্থলের মাঝখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জানিয়েছেন ওই প্রদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাইদ জামিল।
আহত ব্যক্তিদের কোয়েটা সিভিল হাসপাতাল, বোলান মেডিকেল কমপ্লেক্স ও কোয়েটা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে প্রাদেশিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফয়েজ কাকর জানান। তিনি জানান, এসব হাসপাতালে ৪০টির মতো মরদেহ রয়েছে।
সিভিল হাসপাতালের মুখপাত্র ওয়াসিম বেগ বলেন, তাঁর হাসপাতালে ৫৩ জনের মরদেহ ও ৭৩ জন আহত ব্যক্তিকে আনা হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
২০১১ সালে এই মাসটাং জেলাতেই গ্রেনেড হামলায় নিহত হয় সিরাজ রাইসানির কিশোর ছেলে। সিরাজের গাড়িতে ওই গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। ঘটনার সময় সিরাজ নিজেও গাড়ির ভেতরে ছিলেন। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান।
২৫ জুলাই পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী সংঘাত বেড়েই চলেছে। এর আগে ১০ জুলাই পেশোয়ারে আরেকটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় আওয়ামি ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) নেতা হারুন বিলোরসহ আরও ১৯ জন নিহত হন। পরে এই হামলার দায় স্বীকার করে তাহরিক-ই-তালিবান (টিটিপি)। তথ্যসূত্র: ডন, বিবিসি, এএফপি।