অর্থনীতি ডেস্ক:
ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে প্রযোজ্য ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আদায় করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোতে সফটওয়্যার বসাতে যাচ্ছে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ। গ্রাহককে দেওয়া ব্যাংকগুলোর সেবার বিপরীতে প্রযোজ্য ভ্যাট হার অনুযায়ী ভ্যাটের পরিমাণ নির্ধারণ করবে এ সফটওয়্যার। ইতিমধ্যে একটি ব্যাংকে পরীক্ষামূলকভাবে এ সফটওয়্যার চালু হয়েছে। বাদবাকী ব্যাংকগুলোতেও শিগগিরই এটি চালু হবে বলে জানা গেছে। এর ফলে প্রযোজ্য হারে ভ্যাট আদায় করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে এনবিআর।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত হারে ভ্যাট আদায় হচ্ছে না বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি এনবিআরের বৃহত্ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ-ভ্যাট) এক প্রতিবেদনেও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে ব্যাংকের প্রায় ৪০ ধরণের সেবার বিপরীতে ভ্যাট কর্তনের বিধান রয়েছে। কিন্তু এসব সেবার বিপরীতে প্রযোজ্য ভ্যাট সরকারের ঘরে আসছে না বলে মনে করা হচ্ছে। এসব ফাঁকি রোধ করতে প্রযুক্তির ব্যবহারে মনযোগী হয়েছে ভ্যাট বিভাগ। এর ফলে ফাঁকি বন্ধ করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রযুক্তি বা এ ধরণের সফটওয়্যার ব্যবহার করে ব্যাংকিং সেবার হিসাব করা হলে কাঙ্ক্ষিত ভ্যাট আদায় হবে। কিন্তু কেউ কারসাজি করে এই সফটওয়্যারকে পাশ কাটিয়ে ভ্যাট ফাঁকি দিতে চাইলে তা ধরা সহজ হবে না।
এলটিইউ-ভ্যাট অফিস সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ১৭ ব্যাংকে এই সফটওয়্যার বসানো হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ব্যাংকেও এই সফটওয়্যার বসানো হবে। এলটিইউ’র আওতাধীনে থাকা ব্যাংকগুলো হলো রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে উত্তরা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, ন্যাশনাল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, এইচএসবিসি ও সাউথ ইস্ট ব্যাংক।
এলটিইউ-ভ্যাট বিভাগের একজন ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক অনেক ধরণের কেনাকাটা করে। এসব অর্থ পরিশোধের সময় উেস ভ্যাট কর্তন করার কথা। অন্যদিকে রপ্তানি সংক্রান্ত ব্যাংকিং সেবা বাদে সব ধরণের ব্যাংকিং সেবায় প্রযোজ্য হারে ভ্যাট রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো কী ধরণের সেবার বিপরীতে কত টাকা আদায় করে – তার কোন স্বচ্ছ হিসাব পাওয়া যায় না। ব্যাংকগুলোর সেবার বিপরীতে ভ্যাটের পরিমাণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ করবে এ সফটওয়্যার। ফলে সহজে ভ্যাট কর্তন করে রাখার পাশাপাশি এ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আসবে। ফাঁকিও কমে যাবে। অবশ্য ভ্যাট ফাঁকি বন্ধে এটি কার্যকর ব্যবস্থা কিনা – না নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ।