দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক:
ফিলিস্তিনির প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সামরিক শাখা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলের নৃশংসতা আর সহ্য করা হবে না। তারা গাজার চারপাশে অবৈধ ইহুদিবাদী বসতি ও সামরিক স্থাপনায় রকেট হামলার দায় স্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার তারা বলেছে, সাম্প্রতিক তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে ইসরাইলের হামলার জবাবে তারা এ রকেট নিক্ষেপ করেছে। হামাস ও ইসলামিক জিহাদ জানায়, তাদের সামনে সব ধরনের বিকল্প খোলা আছে। ইসরাইলি অপরাধ আর সহ্য করা হবে না।
হামাসের ভাষ্য, আমাদের জনগণকে রক্ষার স্বাভাবিক অধিকার থেকেই মঙ্গলবার সকালে এ প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। সামনে যে কোনো উত্তেজনার দায়ভার ইসরাইলি দখলদারিত্বকেই নিতে হবে। আল কাসেম ও আল কুদস বিগ্রেড জানায়, আমাদের শান্তিপূর্ণ নাগরিকদের ওপর ইসরাইলি হত্যাকাণ্ডের মনোযোগ অন্যদিকে নিতেই ইসরাইল এ আগ্রাসন শুরু করেছে।
হামাসের গাজা উপত্যকার প্রধান ইসমাইল রেদওয়ান বলেন, দখলদারদের জানা উচিত যে প্রতিরোধের মাধ্যমেই তাদের অপরাধের জবাব দেয়া হবে। ২০০৮ সাল থেকে ইসরাইলের সঙ্গে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে হামাসের। মঙ্গলবারের হামলাকে ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
হামাসের নিক্ষেপ করা মর্টারশেল ইসরাইলের কিন্ডারগার্টেনের কাছে পড়লে তাতে ভবনটি ধ্বংস হয়ে যায়। তবে এতে কোনো হতাহত হয়নি। হামাস ও ইসলামিক জিহাদের হামলার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জোরালো জবাব দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেন।
তার বক্তব্যের পর পরই ইহুদিবাদী বিমানবাহিনী গাজায় হামলা শুরু করে। বোমার বিস্ফোরণে উপত্যকাটি কেঁপে উঠতে শুরু করে। যেসব জায়গায় হামলা হয়েছে, সেখান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হতে দেখা যায়।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা উত্তেজনা বাড়াতে চায় না। হামাস দখলদার ইসরাইলকে কড়া হুশিয়ারি দিয়েছে। ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেট সদস্য এমকে জামাল জাহালকা বলেন, পরিস্থিতির এ উত্তেজনার জন্য ইসরাইল সরকার দায়ী। তিনি বলেন, তারা গাজায় একটি অহিংস আন্দোলনকে কোণঠাসা করে রেখেছে। তাদের বিক্ষোভ থামাতে ইসরাইল সামরিক সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।
রকেট হামলাকে ইরানসমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রকাশ্য হামলা হিসেবে অবিহিত করেন অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন। তিনি অভিযোগ করেন, তারা ইসরাইলি নিরাপত্তা ধ্বংস করতে চায়।
গত ৩০ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ফিলিস্তিনিদের নিজেদের বসতবাড়িতে ফেরার বিক্ষোভের উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটল। গাজায় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে ইসরাইলি স্নাইপারদের গুলিতে ১২৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন হাজার হাজার।
১৯৪৮ সালে ইহুদি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় সাড়ে সাত লাখ আরব অধিবাসী নিজেদের ভিটেমাটি থেকে বিতাড়িত হন। পার্শ্ববর্তী আরব দেশ, অধিকৃত পশ্চিমতীর ও অবরুদ্ধ গাজা- এসব আরবরা শরণার্থী হিসেবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। চলতে মাসের ১৪ তারিখে ইসরাইলে মার্কিন দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তরের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ফিলিস্তিনিরা।
এদিন ইসরাইলি স্নাইপাররা ৬২ নিরপরাধ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে। এতে এখন পর্যন্ত কোনো ইসরাইলি সেনা হতাহত হয়নি।