২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:৫৮

তিস্তার এক বালতি পানিও আনতে পারেনি সরকার: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তিস্তা নদীর এক বালতি পানিও সরকার আনতে পারেনি। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী একেবারে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন- তিনি তিস্তার পানি দেবেন না। আরো যেসব অভিন্ন নদী রয়েছে সেখান থেকেও পানি প্রত্যাহার করছে একতরফাভাবেই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তিস্তার পানি ভারতের অংশ গজলডোবা থেকে তারা তো প্রত্যাহার করে নিয়েই যাচ্ছে। এখন এর একটা স্থায়ী সমাধানের জন্য যে প্রচেষ্টা বছরের পর বছর শুনছি আলোচনা, কম্পিউটারের টাইপ, কাগজের দিস্তার পর দিস্তা কাগজ খরচ হচ্ছে। কিছুই হচ্ছে না।’

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, আমি বলেছি এরা (ভারত) দেবে না। প্রেম যদি ওয়ানওয়ে ট্রাফিক হয় সেখান থেকে কখনো কিছু পাওয়া যাবে না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়ায়নি ভারতের সরকার- এটাই স্বাভাবিক। তারা কখনো দাঁড়াবে না। সরকারের অনুগত পররাষ্ট্রনীতির কারণেই ভারত একতরফাভাবে বাংলাদেশের ওপর হস্তক্ষেপ করছে।

অভিযোগ করে রিজভী বলেন , আবারো ক্ষমতায় আসার দেন-দরবার করতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেছেন।

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে খবরে এটা পরিষ্কার যে, শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থে ভারত যাননি, তিস্তার পানির জন্য যাননি, সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যার রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে যাননি, তিনি গেছেন ক্ষমতার টিকে থাকার দেনদরবারে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে নিজ দেশের জনগণকে বাদ দিয়ে এখন মুরুব্বীদের কাছে দেন-দরবার শুরু করেছেন। কারণ তিনি (শেখ হাসিনা) বুঝতে পেরেছেন তাদের ‍দুঃশাসনের জবাব দিতে মানুষ প্রস্তুত হয়ে আছে, তার বিদায়ঘন্টা বেজে গেছে। ’

‘সেজন্য ক্ষমতাসীনদের চিরাচরিত আশ্রয়স্থল ভারতের শরণাপন্ন হয়েছেন শেখ হাসিনা আবারো ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি একতরফা নির্বাচন নিশ্চিত করে অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে আবারো পরিষ্কার বলে দিতে চাই, মুরুব্বীদের কাছে দেন-দরবার ও আকুতি-মিনতি করে কোনো লাভ নেই। জনগণই সকল ক্ষমতার ধারক।’

রিজভী বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যায় সারাদেশকে লাশের মিছিলে পরিণত করে, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, দখলবাজী আর দলীয়করণের মাধ্যমে গোটা দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছেন শেখ হাসিনা। এখন তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি চেয়ারপারসন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে ঢুকিয়ে একটা অস্বাস্থ্যকর, জরাজীর্ণ, নানা অসুখ-বিসুখের উৎসস্থল অবাসযোগ্য কারাকক্ষের মধ্যে বাস করানোর পরও প্রধানমন্ত্রী একতরফা নির্বাচনের মনোবাসনা পূরণে নিরাপদ বোধ করছেন না।’

‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও সকল দলের অংশগ্রহণে। দেশের জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া আগামী নির্বাচন হবে না। অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’

ঝিনাইদহের শৈলাকুপা উপজেলার তিরিপিনি ইউনিয়নের যুবদলের সহ-সাংগঠিক সম্পাদক লিটন মোল্লাকে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমুখ।

দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ

প্রকাশ :মে ২৭, ২০১৮ ৩:১৫ অপরাহ্ণ