আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ নিয়ে তদন্ত করছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনও তৈরি করেছে তারা। তবে এখনও প্রকাশ করা হয়নি। সিনেটর মার্কলি পম্পেওকে আহ্বান জানান, রোহিঙ্গা নিপীড়ন নিয়ে পররাষ্ট্র দফতরের তৈরি করা প্রতিবেদন যেন প্রকাশ করা হয়। তিনি পম্পেওকে প্রশ্ন করেন, এমন কোনও কারণ আছে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা যাবে না। জবাবে পম্পেও বলেন, ‘এমন কোনও কারণ নেই। আমিও আপনার সঙ্গে একমত যে এটা প্রকাশ করা জরুরি।’
সিনেটর মার্কলি আশা করেন, এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে। অন্যথায় বিশ্বের তাদের নীতিগত নেতৃত্ব ক্ষুন্ন হতে পারে। একইসঙ্গে বলিষ্ঠ ভূমিকা না রাখলে অন্যান্য দেশেও সংখ্যালঘুরা নিধনযজ্ঞের শিকার হতে পারেন। এছাড়া অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে প্রকাশিত আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি কর্তৃক হিন্দু গ্রামবাসীদের হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। দফতরের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা অ্যামনেস্টির রিপোর্টে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দায়ী সবাইকেই শাস্তির আওতায় আনা উচিত। যুক্তরাষ্ট্র তাদের তদন্ত চালিয়ে যাবে।’
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করেছিল, রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র বাহিনী আরসা অন্তত ৯৯ জন হিন্দু নারী, পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করেছে। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। তবে মিয়ানমার বরাবর এই অভিযোগ অস্বীকার করে খুন ধর্ষণের দায় আরসার ওপর চাপিয়ে আসছে। সেনাবাহিনীর অভিযানের প্রথম দিকে বিভিন্ন মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে এলেও গত ৩১ জানুয়ারির পর থেকে রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছে আরসা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, সেনা অভিযান শুরুর মধ্যেই সম্ভাব্য এক বা দুটি ঘটনাতেই প্রায় ৯৯ জন হিন্দু রোহিঙ্গাকে হত্যা করে আরসা। সংস্থাটি বলছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ও রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গারা নিশ্চিত করেছে উত্তরাঞ্চলীয় মংডু শহরের আশপাশের গ্রামে হিন্দু জনগোষ্ঠীর এসব রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে আরসা।
১৯টি মার্কিন ও কানাডীয় মুসলিমদের সংগঠনের জোট বার্মা টাস্ক ফোর্স অ্যামনেস্টির এই প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেন, ‘এতে করে হত্যাযজ্ঞ আরও বেড়ে যাবে। বিশেষ করে ভারতে অবস্থান করা ৬০ হাজার রোহিঙ্গার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।’ অ্যামনেস্টির অভিযোগ ও তথ্যপ্রমাণের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সংগঠনগুলো। তারা জানায়, অ্যামনেস্টির দেওয়া তথ্য ও সিদ্ধান্তে প্রশ্ন থেকে যায়। এটা মিয়ানমার সরকারের পক্ষে প্রচারণা।
এদিকে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ ন্যাশনাল ডিফেন্স অথোরাইজেশন আইন ২০১৯ পাশ করে। এতে মিয়ানমারে জাতিগত নিধনযজ্ঞের কথা উল্লেখ আছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি