আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চীনের বিনিয়োগের ফাঁদে পড়ে ঋণে ফেঁসে গেছে ইউরোপের ৭ দেশ। বেইজিংয়ের উচ্চাভিলাষী ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের আওতায় চীনের দেয়া বড় অংকের ঋণ শোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে এসব দেশ। ফলে দেশগুলোর ঘাড়ে চেপে বসছে ঋণের বোঝা। ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বলকান অঞ্চলের সাতটি দেশের ওপর দিয়ে যাচ্ছে চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রকল্প। চীনের বিনিয়োগে এসব দেশ অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা লাভবান হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সরকারি খাতে বাড়ছে বিপুল ঋণ।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সংস্থা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে। এদিকে চীন ‘চেক বুক কূটনীতি’ ব্যবহার করে অন্যান্য দেশের ভূমি দখলে নিচ্ছে বলে আরেক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। চীনের বিনিয়োগের জালে ফেঁসেছে আলবেনিয়া, বসনিয়া, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, কসোভো, মেসিডোনিয়া ও মন্টিনিগ্রো। ওয়াশিংটনভিত্তিক আইএমএফ বলছে, ২০১৫ ও ২০১৭ সালের মধ্যে চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে এসব দেশ।
বলকান রাষ্ট্রগুলোর জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশই ব্যয় হচ্ছে এ ঋণ পরিশোধে। পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, মন্টিনিগ্রো গত বছর জনকল্যাণমূলক ব্যয় হ্রাস, সরকারি কর্মচারীদের বেতন কর্তন ও সিগারেট, অ্যালকোহল ও কয়লার ওপর কর বাড়িয়ে দেয়। আইএমএফের তথ্যানুসারে, জিডিপিতে ঋণের পরিমাণ আলবেনিয়ার ৬৯.৯২ শতাংশ, বসনিয়ার ২৬, বুলগেরিয়ার ২২.৭, ক্রোয়েশিয়ার ৭৮, কসোভোর ১৬.৬৩, মেসিডোনিয়ার ৩৮.৭ ও মন্টিনিগ্রোর ৬২.৫ শতাংশ।
এদিকে বড় অংকের বিনিয়োগের নামে চীনের ‘চেক বুক কূটনীতি’র খপ্পরে পড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ফলে বাধ্য হয়ে চীনের হাতে তুলে দিচ্ছে ভূমি, বন্দর, বিমানবন্দর। হার্ভার্ভ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ১৬টি দেশ চীনের কাছ থেকে বড় অংকের ঋণ নিয়েছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে শ্রীলংকা, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, পাপুয়া নিউগিনি ও মালয়েশিয়া।
চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর প্রকল্পে ৬,২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ বেইজিং। এরই মধ্যে ১,৯০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। এর বিনিময়ে চীনের কাছে একটি বন্দর হস্তান্তর করেছে ইসলামাবাদ। বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পে শ্রীলংকাকে ৯০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে চীন। বিনিময়ে শ্রীলংকা হাম্বানতোতা বন্দর চীনকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিয়েছে। এরই মধ্যে বন্দরটিতে দক্ষিণ চীন সাগর হয়ে চীনা জাহাজ নোঙর করা শুরু করেছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি