নিজস্ব প্রতিবেদক:
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে ১২,০৮৮.১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে দেশে প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রেমিটেন্সের চেয়ে এ সময়ে আসা রেমিটেন্সের পরিমাণ ১৭.৫১ শতাংশ বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পযন্ত সময়ে দেশে রেমিটেন্স এসেছিল ১০,২৮৭.২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান জানান, দেশে টাকা পাঠাতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের উৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু পদক্ষেপ নেয়ায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। তিনি বলেন, এর আগে প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংসহ কিছু ইনফরমাল চ্যানেল ব্যবহার করতো।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়ানোর কারণে ইনফরমাল চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠানোর হার কমেছে। তিনি জানান, অবৈধ চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠানো বন্ধ করতে বিকাশসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল প্রোভাইডার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ঈদের মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এপ্রিলে ১,৩২৭.১৮ মিলিয়ন, মার্চে ১,২৯৯.৭৭ মিলিয়ন, ফেব্রুয়ারিতে ১,১৪৯.০৮ মিলিয়ন, জানুয়ারিতে ১,৩৭৯.৭৯ মিলিয়ন, ডিসেম্বরে ১,১৬৩.৮২মিলিয়ন, নভেম্বরে ১,২১৪.৭৫ মিলিয়ন, অক্টোবরে ১,১৬২.৭৭ মিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে ৮৫৬.৮৭ মিলিয়ন, আগস্টে ১,৪১৪.৫৮ মিলিয়ন এবং জুলাইয়ে ১,১১৫.৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের এপ্রিলে ১,০৯২.৬৪ মিলিয়ন, মার্চে ১,০৭৭.৫২ মিলিয়ন, ফেব্রুয়ারিতে ৯৪০.৭৫ মিলিয়ন, জানুয়ারিতে ১,০০৯.৪৭ মিলিয়ন, ডিসেম্বরে ১,১৬৩.৮২ মিলিয়ন, নভেম্বরে ১,২১৪.৭৫ মিলিয়ন, অক্টোবরে ১,১৬২.৭৭ মিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে ৮৫৬.৮৭ মিলিয়ন, আগস্টে ১,৪১৮.৫৮ মিলিয়ন, এবং জুলাইয়ে ১,১১৫.৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আসে।
গত মার্চ মাসে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক যথাক্রমে অগ্রণী, জনতা, রূপালী, সোনালী, বেসিক এবং বিডিবিএল ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স এসেছে ৩২৬.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং একমাত্র রাষ্ট্র মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এ সময়ে দেশে রেমিটেন্স এসেছে ১০.৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এ সময়ে অগ্রণী ব্যাংকে ১৩০.৩৫ মিলিয়ন, জনতা ব্যাংকে ৭৯.৯৮ মিলিয়ন, রূপালী ব্যাংকে ১৫.৩১ মিলিয়ন, সোনালী ব্যাংকে ১০০.৭৭ মিলিয়ন, এবং বেসিক ব্যাংকে ০.১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
পাশাপাশি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৯৭৫.৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে এসেছে সবোর্চ্চ পরিমাণ ২৬৬.১৯ মিলিয়ন এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৬.৩৯ মার্কিন ডলার।
মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বলেন, রেমিটেন্স প্রবাহ দিন দিন বাড়ছে। কর্তৃপক্ষ লিগ্যাল চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিটেন্স দেশে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা প্রবাসীদের জন্য লিগ্যাল চ্যানেলের প্রক্রিয়া সহজতর করার চেষ্টা করছি। এ লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউজের সঙ্গে আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।
দৈনিক দেশজন /এন এইচ