নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘বিএনপি না আসলেও নির্বাচন হবে’ মর্মে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার যে বক্তব্য দিয়েছেন তা জবরদস্তিমূলক এবং একতরফা নির্বাচনেরই ইঙ্গিতবহন করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেছেন-‘বিএনপি আসুক না আসুক, যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, কে আসলো আর না আসলো তাতে কিছু আসে যায় না, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী’র নির্বাচনের মতো বিএনপি নির্বাচনে না আসলে আমাদের কিছু করার নেই। তাছাড়া খালেদা জিয়ার সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক কি?’
কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, আমি বলতে চাই-বিশাল সম্পর্ক আছে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা গভীর ষড়যন্ত্র। এই বক্তব্য জবরদস্তিমূলক, একতরফা নির্বাচনেরই ইঙ্গিতবহন করে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে ক’টি আসনে দাঁড়িয়েছেন তিনি কখনোই সেই নির্বাচনে পরাজিত হননি। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পরাজিত হয়েছেন। সেজন্য বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় প্রধানমন্ত্রীর এতো অসুয়া, এতো বিদ্বেষ। আর এজন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে সরাতে এতো ষড়যন্ত্র।
তিনি বলেন, আমি ওবায়দুল কাদের সাহেবের উদ্দেশে বলতে চাই-বিএনপি চেয়ারপাসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মানেই জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক, বেগম খালেদা জিয়া মানেই বিএনপি, বেগম খালেদা জিয়া মানেই গণতন্ত্র। বেগম খালেদা জিয়া জনগণের সাথে কখনো প্রতারণা করেননি। জনগণের প্রতি যখন যে ওয়াদা করেছেন সেটি পালন করেছেন নির্দিধায়। প্রদত্ত অঙ্গীকারের কখনো বরখেলাপ করেননি, কিন্তু পদে পদে জনগণের সঙ্গে বিশ্বস ভঙ্গ করেছেন স্বৈরাচারের শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা পাওয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মলনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি কী ভুলে গেছেন ৮৬ এর নির্বাচনের কথা, ১০ টাকা কেজি চালের কথা, ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার কথা ? আমরা কাউকে মাইনাস করতে চাই না, কিন্তু যারা অন্যকে মাইনাস করতে চায় তারা প্রাকৃতিক নিয়মে নিজেরাই মাইনাস হয়ে যায়। সুতরাং আইন আদালতসহ সবকিছু কব্জা করে বেগম খালেদা জিয়াকে জোর করে সাজা দিয়ে আপনাদের ক্ষমতার ঝাড়বাতির রোসনাই আর বেশি দিন থাকবে না। এবারে আপনাদের পতনের বিষন্ন রাগিনী বাজতে শুরু করেছে।
তিনও আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই বিএনপি দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। খালেদা জিয়া বিহীন কোন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি যাবে না, যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এই মূহূর্তে বিএনপি’র ইশ্তেহার হচ্ছে-দেশনেত্রীর মুক্তি, জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দেয়া এবং দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন।
রিজভী বলেন, আপনার বক্তব্যে পরিষ্কার হয়ে গেছে-বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাই আপনাদের ভয়, আর সেজন্যই আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে মিথ্যা তথ্যের ওপর সাজানো মামলায় তাঁকে কারাবন্দী করে রেখেছেন। জামিনযোগ্য মামলায়ও আপনাদের নিষেধের কারণেই জামিন পাচ্ছেন না তিনি। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেলেও তাঁকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ