২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:৩০

খালেদা মাইনাসের কোনো নির্বাচন মানবে না জনগণ : ড. মোশাররফ

মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করে সরকার নির্বাচনের যে পরিকল্পনা করছে, জনগণ কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না। বারবার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা যায় না।
তিনি বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, গণতন্ত্রের মুক্তি, বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তির জন্য গণআন্দোলনে কোনো বিকল্প নেই। তাই ছাত্র সমাজ, যুব সমাজ, শ্রমিক সমাজ এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশে আগামী দিনে গণজাগরণ ঘটাতে হবে। আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমেই এই স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকার আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম-এর আয়োজনে ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের পথে হাঁটলে জনগণ তা প্রতিরোধ করবে। যারা মনে করছেন জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে ক্ষমতায় টিকে থাকবেন, তা ভুলে যান। জনগণ রাস্তায় নামলে টিকতে পারবেন না।
গণতন্ত্র ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে ড. মোশাররফ বলেন, হাইকোর্ট জামিন দিলেন, আপিল বিভাগও জামিন দিলের। অথচ অন্য মামলাগুলো নিয়ে যেভাবে পরিকল্পনা করছে সরকার, সেটিই বাস্তবায়ন করছে। যদি বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী রেখে নির্বাচন করতে চায়, তাগলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। জনগণ তা মেনে নেবে না।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া এ স্বৈরাচার সরকার দেশের জনগণের ঘাড়ে যেভাবে চেপে বসেছে, এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন খুবই জরুরী। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে সব দলের অংশগ্রহণ জরুরী। যার জন্য আজকে জনগণও চাচ্ছে- আগামী নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে হতে হবে।
বিএনপির রীতিনির্ধারনি নেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, আন্দোলন কখনো ঘোষণা দিয়ে হয় না। কোটা আন্দোলনের নজির টেনে তিনি বলেন, সময় আসছে, জনগণ কারো দিকে তাকিয়ে থাকবে না। তারা নিজেরাই রাস্তায় নেমে নিজেদের অধিকার আদায় করে নেবে। সরকার তখন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি এবং ২০ দল ছাড়া দেশে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না।
‘সরকারি দলে কোন চেইন অব কমান্ড নেই’ মন্তব্য করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সমালোচনায় ড. মোশাররফ বলেন, তিনি বলেছিলেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না। অথচ রমজানের দুদিনের মধ্যেই সব অসহনীয়ভাবে বেড়ে গেছে। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হইয়ে গেছে উল্লেখ করে বিএনপির নীতিনির্ধারনী এই নেতা আরও বলেন, ‘ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো আজ দেউলিয়া। আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর তদন্তে উঠে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ লুট করা হয়েছে সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজনের সহযোগিতায়। এদেশের শেয়ার মার্কেট ধ্বংস করা হয়েছে।
ড. মোশাররফ বলেন, অর্থমন্ত্রী নিজে সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন- শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির তদন্তে এমন কিছু মানুষের নাম এসেছে যাদের হাত আমার থেকেও লম্বা।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, এসবের কারণ- এই সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুম, খুন, লুটপাট, টেন্ডারবাজি এবং আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা এমন পরিমাণে দিয়েছে যে আন্তর্জাতিকভাবেও তারা স্বৈরাচারের স্বীকৃতী পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃত এই ‘স্বৈরাচারী সরকারের’ কবল থেকে মুক্তি পেতে হলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে হবে। বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো বলছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি যদি অংশ না নেয়, সে নির্বাচন কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :মে ১৯, ২০১৮ ৮:১০ অপরাহ্ণ